বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০১:৩০ অপরাহ্ণ, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
রাজনীতির মাঠে বহুল বিতর্কিত ব্যক্তি বহিস্কৃত বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন অবশেষে দলে ঠাই পেয়েছেন। দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফের রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হতে তাগিদ দিয়েছেন। গৌরনদীর শরিকল গ্রামের সন্তান সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপনকে ২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। ওই সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল নিজেকে সেইভ সাইডে রেখে খোদ জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধাচারণ করার। এমনকি জিয়া পরিবারকে বাদ দিয়ে তৎকালীন বিএনপির মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূইয়ার সংস্কার প্রস্তাবে সায় দেয়া। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করেন খালেদা জিয়া। সেই ঘটনায় বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন বিএনপির সিনিয়র এই নেতা।
এরপর থেকে রাজনীতির মাঠ থেকে নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছিলেন। সেই বিতর্কিত নেতা জহির উদ্দিন স্বপনকে দীর্ঘ ১০ বছর পর দলের দুঃসময়ে কাছে টেনে নিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এই নেতাসহ বেশ কয়েকজন সংস্কারপন্থীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় নেত্রী কার্যালয়ে বসেন। সেই সময় বিগত দিনের সব কথা ভুলে বিএনপিকে শক্তপোক্ত করে তুলতে নির্দেশনা দেন। সেই সাথে নিজ এলাকা বরিশাল তথা গৌরনদীতেও সাবেক এই সাংসদের শক্তপোক্ত পুরনো বলয় উজ্জীবিত করার তাগিদ দেন। অবশ্য নেত্রীর এমন প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়ে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন জহির উদ্দিন স্বপন।
সেই সাথে নিজ এলাকা বরিশালের নিস্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার অঙ্গীকার করেছেন। জহির উদ্দিন স্বপনের দৃঢ়চেতা মনোবল দূর্বল বিএনপির কিছুটা হলেও গতি বাড়াবে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। এমতাবস্থায় আভাস পাওয়া গেছে, জহির উদ্দিন স্বপন আগামী সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে মাঠে নামতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি ঢাকা ছেড়ে বরিশাল চলে আসবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে গৌরনদী এলাকায় তার সমর্থকদের অভিমত হচ্ছে, এই নেতা বরিশালে ফিরলে রাজনীতির মাঠে নতুন কিছু দেখা যাবে।
সেক্ষেত্রে এ অঞ্চলের বিএনপির অভিভাবক এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার একক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবেন। নয়া মেরুকরণের এ আভাস খোদ সরোয়ারপন্থীদেরও হতাশায় ফেলে দিয়েছে। সূত্রমতে, দল থেকে বহিস্কার হওয়ার পর জহির উদ্দিন স্বপন মাঝে মধ্যে এলাকায় ফিরলেও রাজনৈতিক কোন কর্মসূচিতে অংশ নেননি। এমনকি মিডিয়ার সামনেও আসেননি। বলা চলে অনেকটা গোপনে বরিশালের বাসায় এসে আবার ফিরে গেছেন, জানতে পারেনি মিডিয়াকর্মীরাও।
২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই নেতা বিএনপির ব্যানারে অংশ নিয়ে আ’লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। এবার তার দলে যোগদানের বিষয়টি স্থানীয় নেতাকর্মীদের স্বস্তি দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দলীয় নেত্রীর সাথে আলোচনার পরে সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলোচনা করবেন এমন কথা মুঠোফোনে জানিয়েছেন। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়ে বলছেন, বরিশালে আসছি।