বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৬:৫০ অপরাহ্ণ, ২৪ জুন ২০১৬
বরিশাল: বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক-সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসকের ১ হাজার ৮৫টি পদের মধ্যে ৫৫৯টিই শূন্য। চিকিৎসক-সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবার অবস্থা নাজুক। জনবল দেওয়ার জন্য বারবার চিঠি লিখলেও শূন্যপদ পূরণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আবার যারা দায়িত্ব পালন করছেন তারাও শহরমূখী হওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও জেনারেল হাসপাতাল বাদে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৮১টি হাসপাতালে ১ হাজার ৮৫ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে।
বর্তমানে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫২৩ জন। অর্থাৎ বিভাগে অর্ধেকের বেশি চিকিৎসকের পদ শূন্য।’ জেলাভিত্তিক চিকিৎসকের মঞ্জুরি পদ এবং শূন্যপদের তালিকায় দেখা গেছে- বরিশালে চিকিৎসকের পদ আছে ২২৩টি। কর্মরত আছেন ১৩৬ জন। শূন্য রয়েছে ৮৭টি পদ। পটুয়াখালীতে ২২৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১০১ জন। শূন্য পদ রয়েছে ১২৮টি। ভোলায় চিকিৎসকের ২০০ পদের বিপরীতে কর্মরত ৯৬ জন। পদ শূন্য আছে ১০৪টি। পিরোজপুরে চিকিৎসকের ১৬৮টি পদের মধ্যে শূন্য ৮১টি। বরগুনায় পদের সংখ্যা ১৬২।
এর মধ্যে শূন্য আছে ১১৭টি। ঝালকাঠি জেলায় ১০২টি পদের বিপরীতে ৬০ জন কর্মরত। পদ শূন্য ৪২টি। বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস বলেন, বিভাগের সব জেলায় চিকিৎসক সঙ্কট আছে। তবে ভোলা ও বরগুনা জেলায় সংকট প্রকট। বরগুনা জেলা হাসপাতালের জন্য ৪২ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু এখানে চিকিৎসক আছেন মাত্র পাঁচজন। তাঁদেরও জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এনে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। হাসপাতালের ৩৭টি চিকিৎসকের পদ শূন্য। ভোলা ১০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসকের ২২টি পদের বিপরীতে শূন্য আছে ১৫টি।’ স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অধিকাংশ চিকিৎসকই নিয়োগ পাওয়ার পর তদবির করে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। ফলে চিকিৎসক-সংকট থাকছেই।
৩৩তম বিসিএসে (স্বাস্থ্য) ৩৫০ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয় বরিশাল বিভাগে। এর মধ্যে ৬০ জন ইতিমধ্যে বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয় চাইলেও সুপারিশ থাকায় ওই সব চিকিৎসককে এই অঞ্চলে রাখা সম্ভব হয়নি। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসক সংকট তীব্র। বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ‘কখনোই চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক পাওয়া যায় না। বর্তমানে বরিশাল বিভাগে চিকিৎসকের পদ অর্ধেকের বেশি শূন্য। ফলে চাইলেও যথাযথভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কেবল সমন্বয় করে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। শূন্যপদ পূরণে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই অবস্থা জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে।’