১২ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

ভারতের বাংলাদেশের জনগণকে নয়, প্রয়োজন হাসিনাকে : রিজভী

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:২১ অপরাহ্ণ, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত খুনি, স্বৈরাচার, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। এতেই বোঝা যায়, ভারতের বাংলাদেশ বা এদেশের জনগণের প্রয়োজন নেই, তাদের প্রয়োজন শেখ হাসিনাকে। তাকে দিয়ে ভারত তাদের ফায়দা লুটতে পারে।

আজ সোমবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী প্রচার দল আয়োজিত দ্বিতীয় দফা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বন্যার্তদের মাঝে সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তা।

রিজভী বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। এটি আমার কথা নয়, সালমান এফ রহমানও জানিয়েছেন কিভাবে হাসিনা লক্ষ কোটি পাচার করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা বিদেশ থাকেন। তারা সেখানে কী করেন? কোথায় চাকরি করেন? কী তাদের টাকার উৎস? কাউকে জানানো হয়নি। দেশের টাকা লুট করে তারা বিলাসিতা করছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে বিজনেস করছে। কোথায় পেয়েছেন সে টাকা?

রিজভী বলেন, আজকে নিজেদের পার্সেন্টেজ নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীকে সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছিল। গণমাধ্যমকে জোর করে নিজেদের করে নেয়া হয়েছে। সত্যিকারের মালিককে জেলে ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগের লোককে বসানো হয়েছে।

ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা করা হয়েছে হাজারো ছাত্রজনতাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হাসিনা বলেছিলেন তোমরা তোমাদের কাজ চালিয়ে যাও, গুলি করো। আমি তোমাদের প্রোটেকশন দিবো। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্দ্বিধায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। গণহত্যা চালিয়েছে।

রিজভী বলেন, আবু সাঈদ-মুগ্ধর মতো মেধাবী ছেলে, ছয় বছরের শিশু সন্তানকেও গুলি করে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো ভয় নেই, আমাদের সাথে ভারত রয়েছে।

ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা তো গণতান্ত্রিক দেশ। যে হাসিনা দেশের শিশুকিশোরদের হত্যা করেছে, তারপরও সেই হাসিনাকে আপনারা সমর্থন দিয়ে গেলেন! যে হাসিনা দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তারপরও তাকে আপনারা সমর্থন দিয়ে গেলেন? দেশের বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভ ধ্বংস করেছে, জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে।

নিজেরা যাদের কোলে করে মানুষ করেছে তাদের বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনারসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দেশকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে, এমন একটি ব্যক্তিকে আপনারা আশ্রয় দিলেন? আপনারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়েও বাংলাদেশের জনগণের জন্য আপনাদের একটুও মায়া হলো না? আপনাদের মানবতার অধিকার জাগ্রত হলো না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, অনেকে বলেন- আপনারা কেন ভারতের সমালোচনা করেন? যে ব্যক্তিটি দেশের অগণিত মানুষকে হত্যা করল, রাষ্ট্রকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করল, আজকে তাকেই আপনারা সমর্থন করছেন! তাহলে মানুষ কি করে বুঝবে ভারত বাংলাদেশের বন্ধু? আসলে ভারতের বাংলাদেশ বা এদেশের জনগণের প্রয়োজন নেই, তাদের প্রয়োজন শেখ হাসিনাকে। কারণ তাকে দিয়ে ভারত তাদের ফায়দা লুটতে পারে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি কিন্তু শেখ হাসিনার ভয়ে তার কাছে আত্মসমর্পণ করিনি। শেখ হাসিনা আমাদের কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমরা কারাগার থেকে বের হয়ে আবার এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের কণ্ঠকে মুক্তকণ্ঠ করেছি। আন্দোলন থেকে আমরা পিছপা হয়নি।

প্রচার দলের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সফু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, ডিইউজের সহ সভাপতি রাশেদুল হক, প্রচার দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিদুজ্জমান ডাবলু, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা সোহেল রানা, মো: সাইফুল ইসলাম, কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল বারেক শেখ প্রমুখ।

86 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন