বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:১৫ অপরাহ্ণ, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : লোকসান হয় এমন যুক্তিতে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছিল তিতাস গ্যাস। গত মে মাসে করা আবেদনটি যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সংস্থাটির পরিচালক (গ্যাস) প্রকৌশলী ফজলে আলমকে প্রধান করে একটি যাচাই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনই বাড়ছে না গ্যাসের দাম। নির্বাচনের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদনকে অযৌক্তিক বলছেন খাত-সংশ্লিষ্টরা।
বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের বিল দুই চুলা ১০৮০ টাকা আর এক চুলার বিল ৯৯০ টাকা। দুই চলায় মাসে ৬০ ঘনমিটার এবং এক চুলায় মাসে ৫৫ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহৃত হয় এই হিসাবে বিল নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৮ টাকা। এতে লোকসান হচ্ছে এমন যুক্তিতে গত মে মাসে আবাসিকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করে তিতাস। ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানিটি এক চুলার জন্য মাসে ৭৬ দশমিক ৬৫ ঘনমিটার এবং দু্ই চুলার জন্য ৮৮ দশমিক ৪৪ ঘনমিটার ধরে গ্যাস বিল যথাক্রমে– ১ হাজার ৩৭৯ টাকা ৭০ পয়সা ও ১ হাজার ৫৯১ টাকা ৯২ পয়সা করার আবেদন করে।
সূত্র জানায়, বিইআরসিতে আবেদনটি নিয়ে পরবর্তী সময়ে তেমন আলোচনা হয়নি। অন্য কোম্পানিও আবেদন করেনি। তবে এ নিয়ে পেট্রোবাংলার একটি মতামত পাওয়া গেছে। এর পর চলতি মাসে বিইআরসির এক কমিশন সভায় তিতাসের আবেদনটি যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিইআরসির আইন অনুসারে, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার সংস্থাটির। যদিও বর্তমানে আইন সংশোধন করে নির্বাহী আদেশেও দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বাড়ানোর আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। সে সময় এক ও দুই চুলার বিল নির্ধারণের জন্য আবাসিকের প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের মাসিক গ্যাস ব্যবহার বিবেচনায় নেওয়া হয়। তখন সাড়ে ৩ লাখ প্রিপেইড মিটার ছিল। বিতরণ কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুসারে, এসব মিটারযুক্ত চুলায় গড়ে ৪৫ ঘনমিটারের কম গ্যাস ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু বিইআরসি এক চুলা ও দু্ই চুলার জন্য যথাক্রমে ৫৫ ঘনমিটার এবং ৬০ ঘনমিটার ধরে বিল নির্ধারণ করে, যেটা প্রিপেইড ব্যবহারকারীদের গড় ব্যবহারের চেয়ে বেশি। এর পরও গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য তিতাস যে আবেদন করেছে, তা অযৌক্তিক।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, সবকিছুর ক্রয়ক্ষমতা জনগণের নাগালের বাইরে। তার পরও লুটপাট কমছে না। জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোয় হরিলুট চলছে। দুর্নীতি কমিয়ে লোকসান সামলানোর পরিবর্তে দাম বাড়িয়ে সরকার জনগণের পকেট কাটার কাজ করছে।