৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

ভোলার বাঘমারা সেতুটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ, ০৬ জুন ২০১৭

তেতুলিয়া নদী ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী থেকে খানিকটা বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল ভেলুমিয়াকে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই কঠিন পথকে সহজতর করতে দুই ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া তেতুলিয়া নদীর ওপর ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে বাঘমারা সেতু।

বর্তমানে সেতুর দু’পাশের রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে সেতুটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। সেতুটি জনসাধারনের জন্য খুলে দেওয়া হলে জেলার ৫ উপজেলার সাথে বরিশাল-পটুয়াখালীসহ ১৬টি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। পাশাপাশি অবহেলিত জনপদ দুটির কয়েক লাখ মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।

ভোলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসেন বরিশালটাইমসকে জানিয়েছেন, ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে দৈর্ঘ্য ৪৪০ মিটার এবং প্রশস্ত সাড়ে ৮ মিটার নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভাগের বৃহত্তর বরিশাল উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে নির্মিত সেতুটি আগামী জুলাই মাসের মধ্যে উন্মক্ত করে দেয়া হবে। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে জেলার ৫ উপজেলার সাথে বরিশাল-পটুয়াখালীসহ ১৬টি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি জেলা শহরের খেয়াঘাট ও ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট যেতে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দুরত্ব কমে যাবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার মো. আবু তারেক বরিশালটাইমসকে জানান, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রতিদিন গড়ে ২’শ শ্রমিক সেতুটির নির্মাণ কাজে অংশ নেয়। এটি তৈরীতে ১৩০টন ক্ষমতা সম্পন্ন ক্রেন ও ৪০ মিটার ভাসমান বার্জ (পন্টুন) ব্যবহার করা হয়েছে। ১৭৬টি স্টিল পাইল ও ক্যাচিং বসানো হয়েছে হাইড্রলিক ভাইব্র হেমারের মাধ্যমে। ঢালাই হয়েছে কংক্রিট পাম্পের মাধ্যমে। সেতুটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে চায়না ও ইন্ডিয়ার বিভিন্ন কাঁচামাল। শতভাগ গুনগত মান বজায় রেখেই সেতুটির নির্মান পক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

দীর্ঘকাল ধরেই দুই জনপদের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সু-সম্পর্ক রয়েছে। পশু পালন, জমি আবাদ শিক্ষাসহ বিভিন্ন কাজে এখানকার মানুষ খেয়া নৌকার দিয়ে নদী পারাপার হতো। এতে বর্ষাকালসহ সারা বছরই নানান ভোগান্তি পোহাতে হতো তাদের। সন্ধ্যার পর খেয়া পারাপার বন্ধ হলে দুই জনপদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তো। সেতুটি নির্মাণের মধ্যদিয়ে দিনরাত ২৪ঘণ্টা মানুষের চলাচল অব্যহত থাকবে।

ভেলুমিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আকবর হোসেন, বিল্লাল হোসেন ও করিম পাটোয়ারী বরিশালটাইমসকে বলেন, একসময় কোন কাজে বাংলাবাজার যেতে হলে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। কোন কোন সময় ২ ঘণ্টাও দেরি হতো নৌকা আসতে। অপরদিকে কৃষকের ফসল পরিবহনের জন্য নৌকার ওপর ভরসা করতে হতো। এই সেতু নির্মাণের ফলে সেই ফসল খুব সহজেই স্থানীয় বাজারসহ জেলার বাইরে পরিবহন করা যাবে বলে মনে করছেন তারা।

ভোলা-২ আসন সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল বরিশালটাইমসকে জানান, দক্ষিণ দিঘলদী থেকে ভেলুমিয়া ইউনিয়নে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নৌকা যোগে যাতায়াত করতেন। বাঘমারা সেতু নির্মাণের ফলে সেই যোগাযোগের ভোগান্তির অবসান হয়েছে। এছাড়া এ সেতু নির্মাণের ফলে জেলার দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও চরফ্যাশন উপজেলার মানুষ খুব সহজেই ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট ও খেয়াঘাট পৌঁছতে পারবেন। স্বপ্নের এ সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর দুই ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষের প্রাণের দাবি পুরণ হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এ সাংসদ।”

77 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন