বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৮:০০ অপরাহ্ণ, ২১ অক্টোবর ২০১৭
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্মচাপের প্রভাবে ভোলায় গত দুই দিন ধরে ভারী বর্ষণের সৃষ্টি হয়েছে। নদী-নদীর পানি বিপদসীমসার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নির্মাঞ্চল। দুই দিনে ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভোলার মনপুরা উপকূলে নিুচাপের প্রভাবে বেড়ীবাঁধ ভেঙে সোনরচর, চরযতিন, নাইবেরহাট, ঈশ্বরগঞ্জের বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে ১০ হাজার মানুষ। বাধ ভেঙে নিখোঁজ হয়েছেন ৩ জন।
নিখোঁজরা হলেন- ইলিয়াস, রুহুল আমিন ও রাহাত। তাদের সবার বাড়ি উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে ফকিরের দোন এলাকায়। নিখোঁজ তিন ব্যক্তিকে খুঁজতে তিনটি ট্রলার মেঘনায় গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান শারিয়ার চৌধুরী দীপক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও জোয়ারের পানিতে ২ হাজার একর আমনের ক্ষেত প্লাবিত হয়। অপরদিকে উপজেলার প্রাথমিক স্তরের ৪২ স্কুলের চুড়ান্ত মডেল টেস্ট পরীক্ষাসহ ১৬ হাইস্কুল-মাদ্রাসার সমাপনী পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নদীপথে লঞ্চ-সীট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মনপুরা উপকূল। বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারের পূর্বপাশে ফকিরদোন এলাকার ৪ টি স্থানে বেড়ীবাঁধ ভেঙে যায়। এই সময় ওই এলাকার একটি ঘরসহ তিন জন জোয়ারের পানিতে মেঘনায় ভেসে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক, আবদুল, রহিম, বাচ্চু জানান, নতুন আধা কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ভেঙে গেছে। তিনজন জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। আমনের ক্ষেত জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
দিনের জোয়ারের চেয়ে রাতের বেলা জোয়ারের পানি বেশি হবে। এতে ঘর-বাড়িসহ সবকিছু ডুবে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
হাজিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক বরিশালটাইমসকে জানান, চৌধুরী বাজার পূর্বপাশে ফকিরের দোন এলাকায় চার স্থানে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। তিনজনকে জোয়ারের পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। আমনের ফসলের মাঠ জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে।’’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ হাওলাদার জানান, নতুন বেড়ীবাঁধ এলাকা ভেঙ্গে বির্স্তীন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য। এছাড়াও জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। সকলকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভেসে যাওয়া নিখোঁজ তিন জনকে উদ্ধারে ট্রলার পাঠানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার আলম জানান, মেঘনার পানি বিপদসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক মাহবুব জানান, গত দুই দিনে জেলায় ১০৪ মিলিটিার বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে শনিবার হয়েছে ৭৮ মিলিমিটার। নিম্মচাপটি কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে, তবে ৩ নাম্বার সতর্কতা সংকেত বহাল রয়েছে। এদিকে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটের সকল ধরনের নৌ যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।