ভয়ানক অজ্ঞানপার্টি: বরিশাল র্যাবের জালে সহযোগীসহ মূলহোতা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের একটি ভয়ানক অপরাধী চক্রকে বাগে আনতে সক্ষম হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এই চক্রটি বিভাগীয় শহর বরিশালসহ ঝালকাঠি ও আশপাশ জেলাসমূহে কৌশলে অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষকে খাবারের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে সর্বস্ব লুটে নিতো। বাহিনীপ্রধান সোহাগ ঘরামী (৪০) বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা হলেও সে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাপর ইউনিটগুলো তাদের নিশানায় না রাখতে পারলেও এলিট ফোর্স র্যাব অপরাধ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে অজ্ঞানপার্টির মূলহোতা সোহাগকে টার্গেট করে মাঠে নামে এবং সোমবার বরিশাল নগরীর রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। একই সাথে জালে নিয়ে আসা হয় সহযোগী বিপ্লব অধিকারীকেও।
বরিশাল র্যাব জানায়, সাম্প্রতিকালে বরিশালসহ আশপাশ জেলাসমূহের বেশকিছু বাস যাত্রীদের এই চক্রটি খপ্পরে ফেলে সর্বস্ব লুটে নেয়। বিভিন্ন মাধ্যম এ খবর পাওয়া গেলে র্যাবের একটি টিম তাদের লাগাম টানতে অনুসন্ধানে মাঠে নামে। এবং ঝালকাঠির বাসস্ট্যান্ড এলাকার ছদ্মবেশি ডাব বিক্রেতা সোহাগকে নজরদারিতে রাখে।
এরই মধ্যে সোমবার বরিশালের উজিরপুর উপজেলার চানচুড়িয়া গ্রামের ইদ্রিস রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম বাবার চিকিৎসার জন্য ৩০ হাজার টাকা নিয়ে বাসায় ফেরার পথে ঝালকাঠি বাসস্ট্যান্ডে চক্রটির খপ্পরে পড়েন। ওই দিন বেলা পৌনে ১টার দিকে আলী এন্টারপ্রাইজ নামক বাসে উঠলে সেখানে মেডিসিন মেশানো ডাবের পানি খাইয়ে
রবিউল ইসলামকে অজ্ঞান করে তার সাথে থাকা নগদ টাকা হাতিয়ে নেয় ডাব বিক্রেতা সোহাগ ঘরামী। এসময় র্যাব সদস্যরা ছদ্মবেশি ওই ডাব বিক্রেতাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করাসহ লুটে নেওয়া টাকা উদ্ধার করে। এবং অচেতন যুবক রবিউলকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে আসে।
পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যমতে র্যাবের টিম ঝালকাঠির রাজাপুরে এই চক্রের অন্যতম সদস্য বিপ্লব অধিকারীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় এবং একপর্যায়ে তাকে গ্রেপ্তারে সফলতা পায়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর রুপাতলীতে র্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ভয়ঙ্কর চক্রের অপরাধমূলক কর্মকান্ড সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বাহিনীর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহামুদুল হাসান।
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন- এই চক্রটি বরিশাল-ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহে বিভিন্ন সময়ে আবস্থান নেয় এবং সাধারণ মানুষকে কৌশলে ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুটে নেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে আরও সহযোগীদের তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে তারা পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে তৎপরতা চলছে এবং গ্রেপ্তার মূলহোতা সোহাগকে সহযোগীসহ সংশ্লিষ্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
শিরোনামবরিশালের খবর