মাছ ধরা নিষেধ, খাদ্য সহায়তা পাননি জেলেরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় নদী ও সমুদ্রে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর ২২ দিন ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এই তিন সপ্তাহ জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে পারবেন না।
প্রতি বছর নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে থাকে সরকার। নিষেধাজ্ঞার শুরুর দিকেই জেলেদের এই চাল দেওয়ার কথা। এ বছর নিষেধাজ্ঞার সপ্তাহ পার হলেও এখনো খাদ্য সহায়তা পায়নি তালিকাভুক্ত পাথরঘাটার ১১ হাজার ৪১১ জন জেলে পরিবার। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ মৌসুমে ৬০ শতাংশের বেশি মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য সাগর ও নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে।
এ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় জেলেরা নদীতে নামলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২৮ জন জেলেকে মাছ ধরার অপরাধে আটক করা হয়েছে। উপকূলীয় জেলেরা নদী ও সমুদ্রে মাছ শিকার করেই জীবিকা চালায়।
নিষেধাজ্ঞার এ সময় আয়ের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় এখন জাল বুনে-ট্রলার মেরামত করে সময় কাটছে জেলেদের। উপজেলার পদ্মা এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, জেলেরা ট্রলার ঘাটে নোঙর করে দল বেঁধে জাল বুনছেন আবার কেউ কেউ ছেঁড়া জাল ও ট্রলার মেরামত করছেন।
এ সময় জেলেরা বলেন, চলতি মৌসুমে ইলিশের পরিমাণ ছিল কম, তবে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছিল। আশা করি নিষেধাজ্ঞার পরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়বে। পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা এলাকার জেলে রফিকুল আমিন, রিপন মিয়া ও শাহ্ আলম বলেন, আমরা সারা বছর নদীতে মাছ ধরি, হঠাৎ করে অন্য কাজ পারি না। কেউ কাজে ডাকেও না। এ সময়টা জাল বুনে পার করি। কিন্তু হাতে তো টাকা আসে না।
সরকার যে চাল দেয় তাতে উপকার হয়। আগেরবার আগেভাগেই চাল পেয়েছিলাম। এবার এখনো পাইনি। কী কারণ সেটা জানি না। অভাবের সময়ে চাল না পেলে পরে চাল দিয়ে কী করব! এখন দিলে উপকার হতো।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার (অপু) বলেন, মা ইলিশ যাতে নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে সেজন্য ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর, কোস্টগার্ড, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ উদ্যোগে অভিযান চালানো হচ্ছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আইন অমান্যকারী জেলেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, পাথরঘাটায় ১১ হাজার ৪১১ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অনুকূলে ডিও দেওয়া হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই জেলেরা হাতে চাল পেয়ে যাবেন বলেও তিনি জানান।
বরগুনা, বিভাগের খবর