গাবখান ব্রিজে টোলের ২শ ৪০টাকা চাইতে গিয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও একাধিক মামলার আসামী মিজান ও মিরাজ সহ ৫ থেকে ৭জন স্বন্ত্রাসীর হামলায় আহত টোল আদায়কারী মো: জাহিদ হেসেন (২৭) দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রবিবার রাত ১টায় মারা গেছে। ১০ মে সন্ধ্যায় গাবখান ব্রিজের টোল ঘরের কাছে চালানো এ হামলায় গুরুতর আহত জাহিদকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যেলে প্রেরন করলে ৫দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রবিবার দিবাগত রাত ১টায় সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেছে।
তবে হামলার ঘটনায় জাহিদের পিতা ফারুক হোসেন বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় একটি মামলা দায়েরের পর ৫ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আসামীদের কাউকে গ্রেপ্তার করেনি বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে।
থানায় দেয়া অভিযোগ ও নিহতের পরিবার জানায়, ঝালকাঠী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও গাবখান ব্রীজের ইজারাদার মাহাবুব হোসেনের নিয়োগকৃত কর্মচারী হিসাবে নিহত জাহিদ হোসেন ও সাদ্দাম হোসেন কর্মরত ছিল।
স্থানীয় ট্রলি মালিক মিজান খলিফার গাড়ীতে একাধিকবার মালামাল পরিবহন করার পর মঙ্গলবার সকালে সাদ্দাম হোসেন টোল বাবদ ২শ ৪০টাকা চাইতে গেলে সে তাকে চরথাপ্পর মারে। এ সময় টোল ঘরে উপস্থিত জাহিদ গিয়ে সাদ্দামকে রক্ষা করলে মিজান তাদের দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে টনাস্থল ত্যাগ করলে চলে যায়। হুমকির পর ভয়ে তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও হামলাকারীদের ‘বড় ভাই’ হুমায়ূন কবির খানকে জানাতে তিনি সন্ধ্যায় বিষয়টি মিমাংসা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
কিন্তু সন্ধ্যায় বিষয়টি মিমাংসার বদলে আনুমানিক সাড়ে ৭টার সময় পশ্চিম ঝালকাঠী এলাকার মো: আনোয়ার হোসেনের পুত্র মিরাজ হোসেন (২৯) ও জলিল খলিফার পুত্র মিজান খলিফা (২৮) টোল ঘরে কর্মরত জাহিদের উপর হামলা চালায় এবং লোহার জিআই পাইপ দিয়ে মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থান পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করলে সে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত সবাই জাহিদকে উদ্ধার করে ঝালকাঠী সদর হাসপাতালে নিলে তারা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করে। বরিশালে তার অবনতি ঘটলে পরের দিন ঢামেক হাসপাতালে প্রেরন করলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জাহিদকে লাইফ সাপোর্টে রাখে।
স্থানীয়রা জানায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো: ফারুক হোসেনের এক পুত্র ও দুই কন্যার মধ্যে একমাত্র পুত্র জাহিদের এলাকায় কোন শত্রু ছিলনা। পরিশ্রমি হিসাবে এলাকার কোন দলাদলীতে সে জড়িত হতো না বলে তার এ আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সোমবার সকাল থেকে পশ্চিম ঝালকাঠি, কিফাইত নগর, গাবখান টোলঘর এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও ডিবি সদস্যরা টলহ জোরদার করায় এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সন্ধ্যায় ঝালকাঠী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি, শহর আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ও গাবখান ব্রীজের ইজারাদার মাহাবুব হোসেন নিহত জাহিদের বাড়ীতে গিয়ে শোক সন্তপ্ত পরিবারকে শান্তনা দেয় ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনে সহযোগীতার আশ্বাস দেন।