অবশেষে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন ভোলার মনপুরার মেঘনা নদী থেকে অপহৃত জেলে রাকিব মাঝি। ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছে জলদস্যু আলাউদ্দিন বাহিনী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাকিব মাঝিকে আজ শনিবার ভোরে মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নসংলগ্ন চরপিয়ালে রেখে যায় জলদস্যুরা। পরে চরপিয়াল থেকে একটি ছোট নৌকায় করে মনপুরারায় আসেন তিনি। সকাল ৮টায় তিনি সাকুচিয়া থেকে মোটরসাইকেলে বাড়িতে আসেন। অপহরণের ৩৪ ঘণ্টা পর রাকিব মাঝি ফিরে আসায় জেলে পরিবারের সদস্যদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
উদ্ধার হওয়া জেলে রাকিব মাঝি জানান, ইলিশ ধরা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় হাতিয়ার জলদস্যু সম্রাট আলাউদ্দিন বাহিনী জেলেদের ওপর হামলা চালিয়ে ট্রলারসহ তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দস্যুরা হাতিয়া উপজেলার গাইছসা চর নামক স্থানে জিম্মি করে রাকিবকে মারধর করে। রাকিব বলেন, “কোস্টগার্ডের অভিযানের কথা জানতে পেরে আমাকে তারা ওই রাতেই অন্য একটা চরে নিয়ে যায়। আমাকে মারধর করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করে জলদস্যুরা। মুক্তিপণের টাকা না পেলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। ভয়ে ও আতঙ্কে আমি আড়তদার ও পরিবারের কাছে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার জন্য বলি।”
রাকিব মাঝি আরো বলেন, “আমার মোবাইল খুলে জলদস্যুরা বিভিন্ন জায়গায় কথা বলে। দর কষাকষির একপর্যায়ে আড়তদার ও পরিবার ৩০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হয়। অবশেষে মুক্তিপণের ৩০ হাজার টাকা জলদস্যুদের দেওয়া বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে পাঠানো হলে তারা আমাকে মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়াসংলগ্ন চরপিয়াল এলাকায় আজ ভোরে রেখে যায়। আমি চর থেকে ছোট একটি দাড়ের নৌকা দিয়ে মনপুরায় চলে আসি।”
এ ব্যাপারে রামনেওয়াজ ঘাটের মৎস্য আড়তদার মোমিন মিয়া বলেন, “পরিবারের কান্নায় জেলে রাকিব মাঝির মোবাইলে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণের ৩০ হাজার টাকা জলদস্যুদের দেওয়া বিকাশ এজেন্টে পাঠানোর পর তারা আমার জেলেকে মুক্তি দিয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “কোস্টগার্ডের অভিযানেও অপহৃত জেলেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। জেলেরা এখন নদীতে মাছ ধরতে সাহস পাচ্ছেন না। ভয়ে ও আতঙ্কে রয়েছেন জেলে ও জেলে পরিবারের লোকজন। এ ছাড়া সোহরাব মাঝির মাছ ধরার ট্রলারটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।”
হাতিয়া জোনের কোস্টগার্ড প্রধান লে. কমান্ডার ওমর ফারুক বলেন, “আমরা ঘটনা শোনার সাথে সাথে অপহৃত জেলে ও সোহরাব মাঝির জালসহ ট্রলারটি উদ্ধারের জন্য অভিযান পরিচালনা করি। আমাদের উদ্ধার অভিযানের কথা জলদস্যুরা জানতে পেরে তারা এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় আত্মগোপন করেছে। তবে, মেঘনায় জলদস্যুদের ধরার অভিযান অব্যাহত থাকবে।”