জিতলেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে যাবে খুলনা টাইটানস। এমন সমীকরণ নিয়েই মাঠে নেমেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ব্যাটিংয়ে দুর্বলতা থাকলেও বোলিং নৈপুণ্যে বরিশালকে ২২ রানে হারিয়ে ফের শীর্ষ স্থান দখল করলো খুলনা টাইটানস।
৬ ম্যাচে ৫ জয়ে খুলনার সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট। যার মধ্যে টানা চারটিতে জিতেছে খুলনা।
১৫২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই খুলনার বোলিংয়ে খেই হারাতে থাকে বরিশাল। দলীয় ৮ রানে ওপেনার ফজল মাহমুদ (০), ২৫ রানে মেন্ডিসকে (২১) ফেরায় খুলনা। প্রথম উইকেটটি নেন পেসার জুনায়েদ আর দ্বিতীয়টি নেন শফিউল।
এরপর থিতু হতে পারেননি শামসুর রহমানও। তাকে জুনায়েদের তালুবন্দী করেন মাহমুদউল্লাহ। মাঝে অবশ্য দেওয়াল হয়ে দাঁড়ান শাহরিয়ার নাফিস ও মুশফিক। হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ৪৩ রানের এই জুটি ভাঙেন মোশাররফ রুবেল।
২৮ রানে ব্যাট করতে থাকা নাফিসকে শুভাগতের তালুবন্দী করেন মোশাররফ। একই ওভারের পঞ্চম বলে নতুন নামা পেরেরাকেও টিকতে দেননি মোশাররফ। কুপারের হাতে তাকেও ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন।
সঙ্গীদের এমন বিসর্জনে অপর প্রান্তে ধৈর্য্য হারা হয়ে পড়েন মুশফিক। তাই পরের ওভারেই ফেরেন বরিশাল অধিনায়ক। ৩৫ রানে তাকে আরিফুল হকের তালুবন্দী করেন পেসার শফিউল। এরপর একে একে ফেরেন নাদিফ চৌধুরী, এমরিট। এমরিট অবশ্য দুটি দুর্দান্ত শট খেলে ম্যাচটিতে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করেন। তাতেও অবশ্য লাভ হয়নি। শেষ দিকে রুম্মন রাইস ও তাইজুলকে ফিরিয়ে লেজ পুরো ছেঁটে ফেলেন শফিউল। শেষ পর্যন্ত ১৯.৩ ওভারে ১২৯ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল।
খুলনার পক্ষে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেন শফিউল। দুটি করে নেন মোশাররফ রুবেল ও জুনায়েদ খান। একটি করে নেন মাহমুদউল্লাহ ও কুপার। ম্যাচসেরা হন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে বরিশাল বুলসকে ১৫২ রানের টার্গেট দেয় খুলনা টাইটানস। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও রিকি ওয়েসেলসের দুটি ৪০+ ইনিংসের ওপর ভর করে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানে নিজেদের ২০ ওভার শেষ করে খুলনা।
শুরুতে চট্টগ্রামে টসে জিতে বল হাতে তুলে নেন বরিশাল বুলস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। পিচে বলের বাউন্স ছিল নিচু এবং এর জন্য হাতখুলে খেলতে পারেননি খুলনার দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার ও হাসানুজ্জামান। নিখুঁত লাইনে বল করছিলেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। আর তার জোড়া আঘাতেই দলীয় ২২ ও ২৪ রানে বিদায় নেন খুলনার দুই ওপেনার। প্রথমে ফ্লেচার ধরেন সাজঘরের পথ। ৪ রান করে তিনি লফটেড অন ড্রাইভ করে লং অনে আবু হায়দার রনির হাতে ধরা পড়েন।
ফ্লেচারের ভুল থেকে শিক্ষা নিলেন না অপর ওপেনার হাসানুজ্জামানও। আসলে রান বাড়ানোর তাড়নাতে তিনিও মারেন উঁচিয়ে। আবু হায়দার রনি আবারও লুফে নেন সহজ একটি ক্যাচ। এই সময়ে তিন বলের মাঝে দুই রানে দুই ওপেনারকে হারায় খুলনা। ১৯ বলে ১৯ রান ছিল হাসানুজ্জামানের সংগ্রহ।
এরপর দলের বিপদে হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। রিকি ওয়েসেলসকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৪ রান করে খেলায় ফেরান দলকে। তবে হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ব্যক্তিগত ৪৪ রানে তাইজুলের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন খুলনা অধিনায়ক। মিড উইকেটে পুশ করতে গিয়ে টাইমিংয়ের হের ফেরে তিনি বল তুলে দেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। রুম্মন রাইস ক্যাচ নিতে ভুল করেননি। মাহমুদউল্লাহর ২৬ বলের ইনিংসে ছিল ২টি চার ও তিনটি ছয়।
মাহমুদউল্লার প্রস্থানে ক্রিজে আসা শুভাগত হোম প্রথম বলেই রান আউট হন। রিকি ওয়েসেলস লং অনে ড্রাইভ করে প্রথম রান নেওয়ার পর আর রান না নেওয়ার জন্য সংকেত দিলেও শুভাগত তা খেয়াল করেননি। থিসারা পেরেরা বল পৌঁছে দেন মুশফিককে। শুভাগত তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন অন্য প্রান্তে।
এরপর নিজেই বিদায় নেন রিকি ওয়েসেলস। রায়ান এমরিটের বল কাট করতে গিয়ে প্লেইড অন হন তিনি। ২৯ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৪০ রানের একটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন তিনি।
তখনও খুলনা টাইটানসের পথচলা মসৃন ছিল না। কারণ রিকি ওয়েসেলসের বিদায়ের পরের ওভারে আবারও উইকেট হারায় তারা। ১ রানে রুম্মনের বলে কট বিহাইন্ড হন কেভন কুপার। এরপর ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা আরিফুল হকের ২২ বলে ২৬ রানের ইনিংসে ১৫০ অতিক্রম করে খুলনা। তাইবুর রহমান ১০ রান করে শেষ বলে আউট হন।
খবর বিজ্ঞপ্তি, খেলাধুলার খবর, বরিশালের খবর