মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ছোট হয়ে আসছে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দ্বীপ উপজেলা মনপুরার জনপদ। মেঘনার তীব্র স্রোতে চতুর্দিক থেকে ভেঙ্গে কেবলই ছোট হয়ে আসছে মনপুরার মানচিত্র।
গত ৫ বছরে মেঘনার ভাঙ্গনে হাজার হাজার একর ফসলী জমি,ঘর বাড়ী হারিয়ে মানুষ এখন নিঃস্ব। সহায় সম্বল ভিটে মাটি হারিয়ে মানুষ বেড়ীর ঢালে কিংবা নতুন জেগে উঠা চরে মাথা গোঁজার ঠাই নিয়েছে। মেঘনার ভাঙ্গনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থান, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা,ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, মসজিদ, মন্দিরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মনপুরা ইউনিয়নের উত্তর মাথা দিয়ে ভেঙ্গে কেবলই ভিতরে ঢুকছে। ইতি মধ্যে মনপুরার সবচেয়ে বড় বাজার রামনেওয়াজ সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি এখন নদীর গর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে।
মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিড়পাড়, মাছুয়াখালি, কাচারির ডগিসহ ৫টি ওয়ার্ড এবং কাউয়ারটেক, সীতাকুন্ড, ঈশ্বরগঞ্জ মৌজার অধিকাংশ গ্রাম নদীতে হারিয়ে গেছে। পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ছাড়া হাজির হাট ইউনিয়ন , নাইবের হাট বাজার, সোনারচর, চরজ্ঞান, দাসের হাটের পাশাপাশি সাকুচিয়া ও দক্ষিণ সাকুচিয়া মেঘনার ভাঙ্গনে কেবলই ছোট হয়ে যাচ্ছে।
এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে মনপুরা সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে মূল ভূখণ্ড থেকে মনপুরার মানচিত্র। দ্রুত নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ।
রামনেওয়াজ বাজার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. কামরুল অরুন বলেন, ইতি পূর্বে বাজারটি কয়েকবার স্থানান্তর করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী দেনার দায়ে পথে বসেছে। দ্রুত মেঘনার ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের দাবি সরকার যদি কলাতলী টু মনপুরা কোরেজডেম করে বাঁধ নির্মাণ করে তাহলে স্থায়ীভাবে মেঘনার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। ৫০ হাজার একর জমি জেগে উঠবে। পুনর্বাসন হবে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মিসেস শেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন,মনপুরা পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় স্থান। প্রতিদিন মেঘনার ভাঙ্গনে মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে শুরু করেছে।
মেঘনার ভাঙ্গন রোধে পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি মনপুরার রামনেওয়াজ লঞ্চঘাট এলাকা ও চরফ্যাশন উপজেলার ঘোষেরহাট লঞ্চঘাট এলাকায় প্রায় ২শত ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। প্রকল্পটি প্লানিং কমিশনে পাশ হয়ে একনেকে উঠবে বলে জানান তিনি।
খবর বিজ্ঞপ্তি, ভোলা