ভোলা: বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেঘনা নদীতে এমভি ফারহান ২ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেঘনার আলিমুদ্দিন বাজার ও সল্টোর বাজারের মাঝামাঝি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ সময় ট্রলারে থাকা পাঁচ মাঝিমাল্লা নৌকাসহ পানিতে ভেসে যায়। একপর্যায়ে পাশের অন্য ট্রলারের জেলেরা আহত অবস্থায় মোসলেউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, নুরে আলম, হান্নান নামের চার মাঝিমাল্লাকে উদ্ধার করলেও আরিফ (২৭) নামে এক জেলেকে আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরিফ বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বাটামারা গ্রামের মানিকের ছেলে। আহত চার মাঝিমাল্লাকে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরিফের বাবা মানিককে আজ শুক্রবার দুপুরে মেঘনা পাড়ে ছেলের লাশ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আহাজারি করতে দেখা যায়।
ডুবে যাওয়া ট্রলারের মাঝি মোসলেউদ্দিন এবং তিন জেলে জানান, বৃহস্পতিবার রাত সড়ে ৯টার দিকে তারা নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন তারা। এ সময় ঢাকা-বোরহানউদ্দিন রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ ফারহান ২ পেছনের দিক দিয়ে সজোরে ধাক্কা দেয়। তারা চিৎকার দিয়ে লঞ্চ থামাতে বললেও লঞ্চটি থামানো হয়নি। ট্রলারটি লঞ্চের তলদেশে চলে যায়। একপর্যায়ে মাঝি মোসলেউদ্দিন লঞ্চের সঙ্গে দড়ি ছুড়ে কোনোরকমে লঞ্চে উঠে দুর্ঘটনার কথা বললেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
তবে ওই লঞ্চের সুপারভাইজার মো. সোহেল জানান, ঘটনা শোনামাত্রই লঞ্চ থামিয়ে সার্চ লাইট ফেলে জেলেদের উদ্ধারে সহায়তা করা হয়। তবে ওই সময় আরিফ নামের কেউ নিখোঁজ রয়েছেন- এ রকম সংবাদ কেউ দেয়নি।
নিখোঁজ আরিফের বাবা মানিক জানান, তার দুই ছেলের মধ্যে আরিফ বড়। মাত্র বছরখানেক হয় বিয়ে করিয়েছেন তাকে। জালে আটকে থাকা আরিফের গায়ের গেঞ্জি পাওয়া গেছে।
মেঘনার পাড়ে তিনি হাউমাউ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ছেলে মারা গিয়ে থাকলে তাকে যেন লাশটা ফেরত দেওয়া হয়। বোরহানউদ্দিন থানার ওসি রতন কৃষ্ণ রায় চৌধুরী জানান, উপকূলবর্তী থানাগুলোতে বার্তা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশও লাশের সন্ধানে কাজ করছে বলে জানান তিনি।