৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

শিরোনাম

রসুলপুরে বিদ্যুৎ বিলের লক্ষাধিক টাকা চুরি!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৪৪ অপরাহ্ণ, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

বরিশাল নগরীর রসুলপুর এলাকায় অধিকহারে বিদ্যুৎ বিল উত্তোলন করে লক্ষাধিক টাকা চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারে সোমবার রাতভর বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।থানা পুলিশ পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হলেও এলাকাবাসীর উত্তেজনা কমেনি।তারা মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর কাছে সমাধানের দাবী জানিয়ে কয়েকদফা বৈঠক করেছে।সাদিক আব্দুল্লাহ বিষয়টি ফয়সালা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

 

রসুলপুর এলাকার বাসিন্দারা জানায় প্রায় সহস্রাধিক অসহায় পরিবার সরকারী খাস জমিতে ঘর তুলে বসবাস করে।তাদের সুবিধার্থে বিসিসির সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন একটি মিটারের মাধ্যমে পুরো এলাকায় সাব মিটার দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দেন।মাত্র একটি মিটারের রিডিং অনুসারে বিদ্যুৎ বিল জমা দেয়ায় ব্যবসায়িক হারে এলাকাবাসীর বিদ্যুৎ বিল জমা দিতে হয়।এতে প্রত্যেক পরিবারের পৌণে ১২ টাকা হারে ইউনিট প্রতি বিল দিতে হয়।

 

মরার উপর খরার ঘা এর মত বিষয়টি মনে হলেও এলাকাবাসী নিয়মিত বিল পরিশোধ করে।তারা স্থানীয় ব্যবসায়ী জসিম মেলকারকে সকলের বিল উত্তোলন পুর্বক মেইন মিটারে ধার্যকৃত বিল পরিশোধ করার দায়িত্ব দেয়া হয়।সদর ফিডারের মিটার রিডার মোঃ শাহ আলম প্রতি মাসে মেইন মিটারের রিডিং অনুসারে বিল পেপার দেয়।সেই হিসেব অনুসারে জসিম তার সহকারী নাসিরের মাধ্যমে বিল উত্তোলন শেষে পরিশোধ করে।সাধারন জনতা এবিষয়ে তেমন কোন ভুমিকা রাখতে না পারায় টাকা আত্নসাতের ধান্দায় মাতে জসিম।

 

তিনি শাহ আলমের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।সাব মিটারের রিডিং অনুসারে গত মাসে তারা এলাকাবাসীর কাছ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করে।উত্তোলনে আরো প্রায় ৫০ হাজার টাকা বাকি রয়েছে বলে জানায়।শাহ আলম মেইন মিটারের রিডিং না দেখেই ব্যবহৃত রিডিং অনেক কম দেখিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬শ ৪ টাকার বিল করে দেয়।জসিম ওই টাকা পরিশোধ করে।বাকি প্রায় ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ভাগাভাগি করে আত্নসাত করে নেয়।অপরদিকে ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকার ইউনিট অলিখিত ভাবে মিটারে বকেয়া থেকে যায়।যা কয়েকমাস পরে বকেয়া বিল হিসেবে এলাকাবাসীর কাছে দাবী করা হবে।

 

চুরি করে টাকা আত্নসাতকারীরা তখন উলটো এলাকাবাসীর কাছে বর্ধিত বিল ধার্য করবে।পরিশোধে ব্যর্থ হলে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হবে। বিল পরিশোধ করার পরেও বিল অপরিশোধ করার অভিযোগে বিদ্যুৎ লাইন  বিচ্ছিন্ন করে পুরো এলাকাবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলবে।জসিম,নাসির ও শাহ আলমের সুক্ষ চুরির কারনে এলাকাবাসী দুরভোগে পরার বিষয় টের পেয়ে যায়।তারা চুরিকৃত টাকা  আদায়ে আন্দোলন শুরু করে।আস্তে আস্তে পরিবেশ ঘোলাটে হতে থাকে।খবর পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর হারুন অর রশিদের মাধ্যমে ফয়সালা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

 

পরে স্থানীয়রা কাউন্সিলরের প্রতি অজ্ঞাত কারনে বিশ্বাস না রেখে সাদিক আব্দুল্লাহর কাছে যায়।তিনি পরবর্তী মােসর বিল পেপার সহ যোগাযোগ করতে বলেন।বিদ্যুৎ বিল চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে নাসির হোসেন বলেন।আমি জসিম মেলকারের চাকুরি করি।তিনি যেভাবে বলেন আমি সেইভাবে টাকা উত্তোলন করে তার কাছে দেই।তিনি বিল জমা দেন।কত টাকা জমা দেন তা আমার জানা নেই।এব্যাপারে জসিম মেলকার বলেন মিটারে যেভাবে রিডিং হয় সেভাবে বিল উত্তোলন করা হয়।মেইন মিটারের রিডিং অনুসারে বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ বিল পেপার দেয়।সেই টাকা পরিশোধ করা হয়।অনেক সময় টাকা কম হয়।মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ মেইন মিটার না দেখে বিল পেপার দেয়।

 

এতে হেলফের হলেও মিটার রিডিং দেখে পরবর্তীেত সমতা করা হয়।মিটার রিডার শাহ আলম বলেন মেইন মিটারের মিটার রিডিং দেখেই সঠিক ইউনিটের বিল দেয়া হয়।সাব মিটারে কি পরিমান বিল হয় বা উত্তোলন করা হয় তা আমাদের দেখার বিষয় নয়।টাকা আত্নসাতের অভিযোগ কোনপ্রকারই সত্যি নয়।এ ব্যাপারে সদর ফিডারের উপ সহকারী প্রকৌশলী জালাল আহমেদ বলেন রসুলপুর এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থায় একটি মিটারের মাধ্যমে বিল করার পদ্ধতি দিয়ে বিদ্যুৎ সং্যোগ দেয়া হয়েছে।এধরনের কোন অভিযোগ পাইনি।মিটার রিডিং না দেখে বিল করার বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে।প্রমান পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

21 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন