রাজাপুরে নওমুসলিম নারীর ওপর হামলা
সাইদুল ইসলাম, রাজাপুর:: ঝালকাঠির রাজাপুরে সদ্য নও মুসলিম আমেনা আক্তার (২৬) নামে এক নারীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টারদিকে উপজেলার শুক্তাগড় গ্রাম থেকে রাজাপুরে আসার পথে শুক্তাগড় এলাকার সুইচগেট সংলগ্ন ফকির বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এতে আমেনা আক্তারের মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। নও মুসলিম আমেনা বর্তমানে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত আমেনা আক্তার জানান, ৩ বছর আগে স্বামী অপূর্ব কুমার পাল ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলে আমিও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জেনে আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করি।
ধর্ম পরিবর্তনের পরে স্বামী আবদুল্লাহ আল মইন আর আমি শেফালি দাস থেকে আমেনা আক্তার নাম রাখি। কিন্তু তখন আমরা দেশের আইন অনুযায়ী কোর্টে এভিডেভিড করিনি।
এর পর থেকেই আমার ওপরে নির্যাতন শুরু হয় আমার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমিতো ইসলাম ধর্মগ্রহণ করার কারনে আমার বাবার বাড়ি হারিয়ে ফেলেছি।
এর কিছুদিন পরে জানতে পারি আমার স্বামী ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নয় স্থানীয় এক মুসলিম নারীর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেই ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছেন।
আমি সব জানতে পেরে তাকে এসব ছাড়ার জন্য চাপ দিলে আমার ওপরে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে দিতে বলেন।
এর আগেও তার ব্যবসার জন্য অনেক টাকা তাকে নিয়ে দেই ভাইয়ের কাছ থেকে। এখন ধর্ম পরিবর্তনের কারণে আমার বাবার পরিবার আমাকে মেনে না নেয়ায় টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি বলে আমাকে ঢাকায় রেখে ব্যবসার সব কিছু বিক্রি করে আমাদের ৩ বছরের ছেলেকে আমার কাছে রেখে ৬ বছরের ছেলেকে নিয়ে সে এলাকায় চলে আসে।
পরে আমি লোকজনের সহায়তায় এলাকায় এসে জানতে পারি ওই মহিলাকে (প্রেমিকাকে) নিয়ে ঝালকাঠিতে ভাড়া বাসায় থাকেন।
এদিকে গত ৯ নভেম্বর আমি ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে এভিডেভিড করি। এখন আমি সব হারিয়ে অভিভাবকহীন হয়ে মানুষের দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
এ বিষয়ে আমি স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মীমাংসার জন্য বসলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশে এই হামলা চালায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অপূর্ব কুমার পাল বলেন, তার সাথে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলায় সে আমার ঘর থেকে টাকা পয়সা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে ২ মাস পূর্বে পালিয়ে যায়।
আমি এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তার সহযোগীদের নিয়ে আমাকে হয়রানি করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
রাজাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, “এ বিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঝালকাঠির খবর, বিভাগের খবর