জেএমবি নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের ফাঁসির রায় কার্যকরের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে খুললা জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ। রবিবার (১৬ অক্টোবর) রাতেই তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে কারাগার সূত্র। এরই অংশ হিসেবে আসাদুলের সঙ্গে সাক্ষাত করতে দেওয়া হয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের।
আসাদুলের ভাইপো জামাল জানান, রবিবার দুপুর ২টায় আসাদুলের স্ত্রী, তার দুই কন্যা ও ছয় বোনসহ মোট ১২ জন স্বজন তার সাথে দেখা করতে খুলনা কারাগারে প্রবেশ করে। ঘন্টা খানেক সাক্ষাতের পর তারা মূল করাগারে বাইরে আসেন। তবে তারা ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পযর্ন্ত কারা কমপ্লেক্সের মধ্যেই অবস্থান করবে বলো জানা গেছে।
জেল সুপার কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আসাদুলকে ৩ নং কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। দুপর ১টা দিকে খুলনা সিভিল সার্জন এস এম আব্দুর রাজ্জাক তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। ঢাকা থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার পর তার ফাঁসির বিষয়ে জানা যাবে। নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি জল্লাদের নাম প্রকাশ করেননি।
আসাদুলের ফাঁসি রবিবার কার্যকর করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর-ই-আলম।
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় বোমা হামলাকারী ইফতেখার হোসেন মামুন, জেলা জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবদুল মান্নান ও দুধ বিক্রেতা বাদশা মিয়া আহত হন। ২০০৬ সালের ২৯ মে এ হত্যা মামলার রায়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহম্মেদ আসাদুলসহ ৭ জনের ফাঁসির আদেশ দেন।
ইতোমধ্যে এ ঘটনায় জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুক-এর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। দেশের বিভিন্ন কারাগারে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ শীর্ষ এ ছয় জেএমবি নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
এই মামলায় মুত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা আসাদুল ২০০৭ সালের ১০ জুলাই ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার হন। এরপর তিনি আপিল করেন। চলতি বছরের ২৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জেএমবি নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
প্রসঙ্গত, আসাদুলের মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে এক যুগ পর খুলনা কারাগারে কোনো দণ্ডিতের ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
ঝালকাঠির খবর, বরিশালের খবর