ঝালকাঠি: শহরের পশ্চিম ঝালকাঠির পালবাড়ীতে বুধবার রাত আড়াই টায় আঃ ছত্তার ওরফে আলমগীর (২৯) নামে এক যুবককে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গছে। হামলায় আহত আঃ ছত্তার কে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়ার পর রাত সোয় ৩টায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হলে সে বর্তমানে সেখানে মৃত্যু’র সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
গত ২ দিনেও তার অবস্থা কোন উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকরা আঃ ছত্তারকে যতো দ্রুতো সম্ভব ঢাকায় নেয়ার জন্য রেফার্ড করেছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই রামদা সহ এক হামলাকারীকে আটক করলেও পরে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে দফারফা করে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এক কাউন্সিলর ও এসআই কাওসারের মধ্যস্থতায় রামদা সহ আটককৃতকে ছেড়ে দেয়ার এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে গভীর রাতে স্থানীয় মোজাম্মেল হোসেন নামে একব্যক্তি আহত ছত্তারকে নিয়ে ঝালকাঠি হাসপাতালে এসে অসংলগ্ন তথ্য প্রদান করায় কর্তব্যরত চিকিৎসক বিষয়টি তাৎক্ষনিক সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ রহিমকে অভিহিত করেন। তিনি পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পর পুলিশের টহল টিম-৫ এর দায়িত্বে থাকা এক এসআই ও পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার টহল পুলিশের কয়েক সদস্য হাসপাতালে আসলেও তারা রহস্য জনক কারনে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এসময় জরুরী বিভাগের ডাঃ মেহেদী হাসান সাগর ‘মাথার হাড় ভেঙ্গে মারাক্ত জখম ও গলার বামপাশে রক্তাক্ত ক্ষতসহ শরীরে একাধিক আঘাতের কারনে আহত ছত্তারকে এ্যাম্বুলেন্সযোগে শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে।
জরুরী বিভাগে কর্মরত হাসপাতালের একাটি সূত্র জানায়, গভীর রাতে মোজাম্মেল হোসেন নামে এক ব্যক্তি আহত ছত্তারকে নিয়ে ঝালকাঠি হাসপাতালে আসে। সে পালবাড়ী খালে পা ধুতে গিয়ে ঘটলায় আছাড় খেয়ে ছত্তার আহত হয়েছে বলে ডাঃ সাগরকে জানালেও আঘাতের ধরন দেখে তার সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে উক্ত মোজাম্মেল জরুরী বিভাগের বাইরে গেলে আহত ছত্তার ডাঃ সাগরকে মারধর করার বিষয়টি জানালে তিনি এ্যাম্বুলেন্স চালক মহসিনকে সংবাদ দিয়ে দ্রুতো তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেন।
আহত আঃ ছত্তার জানায়, আহত মৎস্যজীবী আঃ ছত্তার পশ্চিম ঝালকাঠির স্বপন পালের কাছ থেকে হাজারপ্রতি ৬শ টাকা দরে ১০ হাজার মাটির চাড়া ক্রয় করে আগাম অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করে বাকি টাকা চাড়া নেয়ার সময় দেয়ার শর্তে চুক্তি করে। কিন্তু তাকে চাড়া না দিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে নগদ টাকায় চাড়া বিক্রয় করার কারনে তাদের মধ্যে কথার কাটাকাটি হলে বুধবারে রাতে আহত ছত্তারকে তাদের সাথে খাবকে বলে।
রাত প্রায় দেড়টার দিকে তাকে চাড়া পোড়ানো পাজার কাছে যাওয়ার কথা বলে ছত্তারকে ঘুম থেকে তুলে বাইরে নিয়ে যায়। এসময় মনোজ পালের বাসার কেয়ারটেকার ইউনুস(৪৫), বাসুদেব পাল, সমীর পাল, ভানু দেব পাল সহ কতিপয় সহযোগী ধারালো রামদা ও লোঠিসোটা দিয়ে আঃ ছত্তার কে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার চেস্টা চালায়। এতে তার ‘মাথার হাড় ভেঙ্গে মারাক্ত জখম ও গলার বামপাশে রক্তাক্ত ক্ষত সৃষ্টিসহ শরীরে একাধিক স্থানে জখম হয়।
বাসু পাল আহত ছত্তারকে চোর অভিহিত করে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ূন কবির খানকে জানালে নিতি ঝালকাঠি থানা পুলিশকে খবর দেন। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও একটি রামদাসহ কেয়ারটেকার ইউনুসকে থানায় নিয়ে আসে বলে সে জানায়। আহত আঃ ছত্তার ওরফে আলমগীর নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর ভেরনবাড়িয়া গ্রামের রুস্তুম আলী’র পুত্র ও বর্তমানে ঝালকাঠি শহরের বিশ্বরোড কলেজ মোড় এলাকার বাসিন্দা।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ওসি মোঃ মাহে আলম জানান, রাতে চুরি করতে এসে এক যুবক স্থানীয়দের গনধোলাইয়ের শিকার হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন তবে এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন।
খবর বিজ্ঞপ্তি, ঝালকাঠির খবর