বরিশাল: রণাঙ্গণ কাঁপানো বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও শুধুমাত্র গেজেটভূক্ত না হওয়ায় মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা জোটেনি জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের শাহাজিরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুলতান শেখের (৬৮)। বুধবার সকালে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে এ মুক্তিযোদ্ধার। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়িতেই ইন্তেকাল করেন ওই গ্রামের মৃত হাসেম শেখের পুত্র মুক্তিযোদ্ধা সুলতান শেখ। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র ও ৩ কন্যা রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দেশ মাতৃকারটানে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারাদিয়ে নিজের জীবন বাঁজি রেখে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে রণাঙ্গণে বীরত্বের ভূমিকা পালন করেন সুলতান শেখ। দেশ স্বাধীনের পর তিনি কর্নেল ওসমানী, ৯নং সেক্টরের গ্র“প কমান্ডার নিজাম উদ্দিন আকন, ভারতে প্রশিক্ষণের সনদপত্র পেলেও রহস্যজনক কারণে গেজেটভূক্ত হতে পারেননি।
ফলে সরকারের দেয়া সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন অসহায় মুক্তিযোদ্ধা সুলতান শেখ। তালিকাভূক্তি হওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালেও তাদের দাবিকৃত উৎকোচের টাকা দিতে না পারায় তিনি গেজেটভূক্ত হতে পারেননি। ফলে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়েও অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় তিনি মৃতুবরণ করেন। আর এ কারণেই মৃত্যুর পর সুলতান শেখের ভাগ্যে জোটেনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা।
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট ছিন্টু বলেন, সুলতান শেখ একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। জীবদ্দশায় গেজেটভূক্ত করার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও তাকে গেজেটভূক্ত করতে পারিনি। সর্বশেষ অনলাইনের মাধ্যমেও সুলতান শেখের আবেদন করা হয়েছিলো। তিনি আরও বলেন, গেজেটভূক্ত না হওয়ায় সুলতান শেখকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া সম্ভব হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষ থেকে তার মরদেহে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে।