১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

রাস্তার ওপর কাঁচাবাজার ভোগান্তিতে নগরবাসী

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ, ২৮ মে ২০১৭

বরিশাল নগরীতে নির্ধারিত স্থানে বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে নানা রকম পণ্য নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। শাক-সবজি, তাজা মাছসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে এসব অস্থায়ী বাজারে। দাম তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় এখানে ক্রেতা সমাগমও বেশি। স্থায়ী বাজারগুলো নিষ্প্রভ হয়ে পড়ছে অভিযোগ তুলে এসব অবৈধ বাজার তুলে দিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন স্থায়ী বাজারের দোকানীরা।

এদিকে সড়কের ওপর বাজার বসাতে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরের আলো ফোটার আগে ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম রাস্তার ওপরের এই অস্থায়ী বাজারগুলোতে। সকালের জগিং সেরে ফেরার পথে অনেকেই ছুটির দিনের বাজার সেরে নেন এখান থেকে। রাস্তার ওপরে মাত্র কয়েক ঘণ্টার এ বাজারের কোনো অনুমোদন নেই। এদিকে সড়কের দুই পাশে অস্থায়ী কাঁচা বাজার গড়ে ওঠায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। আবার বৃষ্টি হলে ভোগান্তিতে পড়েন ওই সব কাঁচাবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা। নগরীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পেছনে এবং জজ কোর্টের সামনে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি প্রতিনিয়ত বসছে মাছের বাজার।

এই সড়কের একাধিক স্থানে রাস্তায় ওপর রয়েছে অবৈধ কাঁচাবাজার। জনদুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে রাস্তার ওপর এখানে-ওখানে রাখা ব্যক্তিগত গাড়ি, পাবলিক বাস ও মোটরসাইকেলগুলো। কোনো কোনো স্থানে ফুটপাত দখল করে বসেছে অস্থায়ী দোকানপাট। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। রাস্তার ওপর মুরগি নিয়ে বসেছেন আবদুর রহমান। বললেন, বাংলা বাজারের সামনে আগে বসতেন, সেখান থেকে চলে আসতে হয়েছে। কোথাও জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে এখানে বসেন। শুধু এই রাস্তাটি নয়, নগরীর বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন বসছে অবৈধ কাঁচাবাজার। এসব বাজারে সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস, ডিম এমনকি আদা-রসুন, ময়দা, চালের গুঁড়া নিয়েও বসেছেন অনেকে।

পাওয়া যাচ্ছে মৌসুমি ফুল-ফল সবই। দাম একটু কম থাকায় ওই সব বাজারগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। নগরীর ফায়ার সার্ভিস অফিস গেটের সামনে ফল বিক্রেতা আমির হোসেনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল এক ক্রেতার। ক্রেতার অভিযোগ, অতিরিক্ত দাম চাচ্ছে বিক্রতা। একপর্যায়ে তিরিক্ষি মেজাজে তাকে বলতে শোনা গেল ‘রাস্তা দখল করে বসেছ, দোকান ভাড়া লাগে না। তারপরও গলা কাটো কেন?’। ফল বিক্রেতা আমির হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, খোলা আকাশের নিচে দোকান। একটু বৃষ্টি বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই দোকান গুটিয়ে নিতে হয়।

রাস্তায় দোকান দিছি বলে একটু দামাদামি করলেই ক্রেতারা রেগে গিয়ে মেজাজ দেখান। রাস্তার ওপর দেকান দেওয়া একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবজির চাহিদাও বাড়ছে। ফলে প্রচুর ক্রেতার আগমনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও তাদের সরবরাহ বাড়াচ্ছেন। তাই স্থায়ী বাজারগুলোতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় রাস্তার ওপরে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে।

রাস্তা দখল করে রাখা কাঁচাবাজার ও দোকানের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেই কেন, জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আওলাদ হোসেন বলেন, এগুলো উচ্ছেদের দায়িত্ব মূলত সিটি কর্পোরেশনের। অবৈধ কাঁচাবাজার উচ্ছেদে সিটি কর্পোরেশন সহায়তা চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। রমজান উপলক্ষে রোববার থেকে সড়কে অবৈধ দোকানপাট, কাঁচাবাজার ও হকার উচ্ছেদে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।”

40 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন