ভোলা: রোয়ানুর ছোবলে চরফ্যাশনের ১১৯টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পরেছে। এসব পরিবারগুলো এখন আত্মীয়স্বজন আর পাড়াপ্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া পানির টানে মূল ভূ-খণ্ডের পূর্বাঞ্চলের মাদ্রাজ ও পশ্চিমাঞ্চলের নজরুল নগর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুই ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ মান্ত্রণালয় থেকে সোমবার পর্যন্ত ৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যদিও দুর্গত পরিবারগুলোর মধ্যে এ চাল বিতরণ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলার ত্রাণ অফিস থেকে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ১১৯টি ঘর ভেঙে গেছে। গৃহহীন এসব পরিবারগুলোর অবস্থান সাগর মোহনার ঢালচর, কুকরী এবং মুজিব নগর ইউনিয়নে। এসব এলাকার ২৫১টি পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। ভেঙে গেছে ৬ কিমি. কাঁচা রাস্তা। সাগর মোহনার এই তিনটি ইউনিয়নের পাশাপাশি মূল ভূ-খণ্ডের মাদ্রাজ ও নজরুল নগর ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এখনো জোয়ারের পানিতে দিনরাত প্লাবিত হচ্ছে।
ভূ-খণ্ডের পূর্বাঞ্চলের মাদ্রাজ এবং পশ্চিমাঞ্চলের নজরুল নগর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের ৩টি পয়েন্টের ১৭৫ মিটার এলাকা ভেঙে গেছে। এ কারণে দু’টি ইউনিয়নের হামিদপুর, চর নিউটন, মোহাম্মদপুর, পূর্বমাদ্রাজ, উত্তর কলমী, চর কলমী এবং দক্ষিণ কলমী গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এখনো দিন-রাত জোয়ারের পানিতে দফায় দফায় প্লাবিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রোয়ানুর তাণ্ডবে চরফ্যাশনের ২৮ কিমি. বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে কুকরী ইউনিয়নের ১৪ কিমি. বেড়িবাঁধ রয়েছে। এছাড়া চরফ্যাশনের মাদ্রাজ ইউনিয়নে ১৭৫ মিটার বাঁধ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানির টানে চরফ্যাশনের তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের চলমান কাজের প্রায় ২কিমি. এলাকা নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। এছাড়া উন্নয়ন কাজের ৮০ হাজার জিও ব্যাগ, ৭ হাজার সিমেন্ট ব্যাগ, পাথর ও বালি নদী গর্ভে ভেসে গেছে। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান উন্নয়ন কাজের ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) কাওসার আলম জানিয়েছেন।
টাইমস স্পেশাল, ভোলা