উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার গাফলতির কারণে অন্তত ৪০০ পরীক্ষার্থী এবার চলমান এইচএসসিতে ইংরেজী ২য় পত্র পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্রে উত্তর লিখতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের আর্তনাদে উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আবার অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসেছে। কিন্তু মুখ খোলার সাহস পায়নি। ঘটনাটি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ভেনু কেন্দ্র মহিলা কলেজে।
এই ঘটনা চাউর হয়ে গেলে পরীক্ষার পরপরই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার অর্থাৎ ইউএনও প্রতিনিধিকে উত্তরপত্রসহ বরিশাল বোর্ডে তলব করা হয়। নিশ্চিত হওয়া গেছে সন্ধ্যা রাতে তিনি বরিশাল বোর্ডে এসে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে উত্তরপত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কি কারণে এত বড় ভুল সংঘটিত হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমুলক কোন ভূমিকা রাখেনি শিক্ষাবোর্ড।
বরং এই পুরো ঘটনার দায় এড়াতে ইউএনও’র প্রতিনিধি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আরিফুজ্জামান ও সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের সাথে জড়িতরা একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। সূত্রমতে, শনিবার সারা দেশের সাথে একযোগে ওই উপজেলায় এইচএসসির ইংরেজী ২য় পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সকালে ইউএনও’র প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান থানায় গিয়ে ‘ক’ সেটের বদলে ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্র নিয়ে আসেন।
ওই প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের দেয়া মাত্রই অনেকে হতভম্ব হয়ে পড়ে। ফলে পরীক্ষা কেন্দ্রে এক উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করে। কলাপাড়া ৪৩৩ নম্বর ওই কেন্দ্রে ৪১৫ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই কেন্দ্রের পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যাপক ফারুক হোসেন জানিয়েছেন প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার সকালে ইউএনও’র প্রতিনিধির সাথে প্রশ্নপত্র আনতে থানায় যান। ওই সময় প্রতিনিধির নির্দেশে ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।
সে সময় ‘ক’ সেট না কেন এমন আপত্তি তুললে ইউএনও প্রতিনিধি মো. আরিফুজ্জামান তাদেরকে ধমক দেন। অবশ্য একই কথা জানিয়েছেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক আবু সাঈদ। একাধিক পরীক্ষার্থী জানিয়েছে, আকষ্মিক প্রশ্নপত্র পরিবর্তনের ফলে তারা বিপাকে পড়েছেন। উত্তরপত্রে অনেক কিছুই লিখতে পারেনি। তাই ইংরেজী ২য় পত্র পরীক্ষা পূনরায় নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সেই সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ সমূলে অস্বীকার করে ইউএনও প্রতিনিধি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুজ্জামানের পরামর্শে তিনি ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্র নিয়ে এসেছেন। তবে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে এই মনিরুজ্জামান মহিলা কলেজ কেন্দ্রে কোন দায়িত্বে নেই।
তবে তার পরামর্শে কেন প্রশ্নপত্র আনতে হবে এমন প্রশ্নে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ইউএনও প্রতিনিধি। এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল আজিম সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতে অপরাগত স্বীকার করেন।
তবে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বরিশালটাইমসকে জানিয়েছেন, বিষয়টি তার নলেজে এসেছে। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তকে খুঁজে বের করে যথাযথ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কি হবে এমন প্রশ্নে হকচকিয়ে যান তিনি।”
শিরোনামক্যাম্পাসের খবর, পটুয়াখালি