বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৯:৪৩ অপরাহ্ণ, ১৬ অক্টোবর ২০১৬
বরিশাল: বরিশাল বিভাগীয় ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভাগীয় ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়ন আয়োজিত রোববারের মানববন্ধনে হামলার নেতৃত্বদানকারী সন্ত্রাসের বরপুত্র কালাম মোল্লাকে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম এসেছে।’
আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় না নিয়ে আসা হলে গোটাদেশে ট্রাক পরিবহন বন্ধ করে কর্মবিরতি পালনের হুমকি দিয়েছে সংগঠনের নেতারা।’
এই সংগঠনের সভাপতি মোহম্মদ আলী বাঘার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সহ-সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক মাসুম খান, সিনিয়ার সদস্য জেহাদুল ইসলাম জেহাদ, কাশিপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির, রুপাতলী শাখার উপদেষ্টা জলিল সরদার, একই শাখার সভাপতি মো. ইউসুফ হাওলাদার ও আমতলা মোড় শাখার সভাপতি সেলিম সিকদার উল্লেখযোগ্য।
বক্তারা বলেন, ‘কালাম মোল্লা খোদ দেশের স্থপতি শেখ মুজিবর রহমান, দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছবি পদদলিত করে চরম অবমাননা করেছে। এই ঘটনায় তাকে কোন প্রকার ছাড় দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। কারণ বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করায় শ্রমিক সংগঠনসহ বরিশালের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ফুঁসে উঠেছে।’
তাছাড়া তিনি বিভাগীয় সংগঠনের সাধারণ-সম্পদক ইমান আলী শরিফ বাবুলসহ ৩ জনকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায়ও শ্রমিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সুতরাং এবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকার কোন সুযোগ নেই বলে সাফ কথা জানিয়ে দিয়েছেন বক্তারা।’’
সূত্রমতে, কেন্দ্রীয় এক যুবলীগ সদস্যের আস্তাভাজন কথিত জেলা কমিটির সভাপতি দাবিদার কালাম মোল্লার বরিশালে গোটা জেলার বিভিন্ন স্থানে শাখা খুলে ট্রাকগুলোতে বেপরোয়া চাঁদবাজি চালিয়ে আসছিল। সেই সাথে বিভাগীয় কমিটির বেশ কয়েকটি শাখা অফিসও জোর-জবরদস্তি করে দখল করে নেয়। এমতাবস্থায় বিভাগীয় নেতারা বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে না পারায় তাদের দমনে কালাম মোল্লা একটি বাহিনী তৈরি করে।’
মূলত সেই বাহিনী নিয়েই ফের শুরু হয় এই সন্ত্রাসের চাঁদাবাজির মিশন। ফলশ্র“তিতে চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে একাধিকবার বিভাগীয় নেতারা তার বাহিনীর হামলার শিকার হন।’
চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল বানারীপাড়ায় কালাম মোল্লার হামলার শিকার হন সাধারণ সম্পাদক ইমান আলী শরিফ বাবুলসহ অন্তত ২০ শ্রমিক। সেই ঘটনায় বরিশাল আদালতে একটি মামলা চলছে।’
তাছাড়া মেট্রোপলিটন বন্দর থানা এলাকায়ও তার হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেটিও বরিশাল আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় গত ১৪ অক্টোবর তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ বিভাগীয় কার্যালয়ে হামলা চালালে শুরু হয় তোলপাড় অবস্থা।’
সেই ঘটনায় ইউনিয়নের সদস্য ইস্তাফিজুর রহমান মুন্না কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এক্ষেত্রে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এবারে নেতারা আহত হওয়ার বিষয়টিকে প্রাধান্য না দিয়ে বেশি মাত্রায় গুরুত্ব পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর ঘটনাটি। কারণ সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার দায়ে আইন করে শাস্তির বিধান পাস করেছে সংসদ।’
তৎমুহুর্তে সেই বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করে এবার ফেঁসে যাচ্ছেন চিহ্নিত সন্ত্রাস কালাম মোল্লা। এমতাবস্থায় পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন মডেল থানার ওসি মো. শাহ্ আওলাদ।’
তবে হামলার শিকার শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের দাবি কালাম মোল্লা তার এলাকা কাশিপুরে বসে নানা ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে কিভাবে প্রতিপক্ষকে রহিত করা যায়।’
এক্ষেত্রে তিনি সফল হতে সেই কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার কাছাকাছি থাকছেন। অথচ সেই নেতার বাবার ছবিই ভাঙচুর করলো কালাম মোল্লা। এই বিতর্কিত ঘটনার পরেও কিকরে একজন সন্ত্রাস কিভাবে আশ্রয় পায় তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। কিন্তু দায়িত্বশীল মহল থেকে কোন সদুত্তোর আসেনি। বরং বলা হচ্ছে সামনে আ’লীগের জাতীয় সম্মেলন। অবশ্য হামলার শিকার নেতারাও জানিয়েছেন সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই তারা এখন কোন কঠিন সিদ্ধান্তে যাচ্ছেন না।’
আগামী ২২ ও ২৩ তারিখের সম্মেলন শেষ হওয়া এবং পুলিশ কী ভূমিকা রাখে সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। এতে যদি কোন ফলাফল না আসে ৩০ তারিখের পর থেকে গোটা দেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতি চলবে।’