সন্ধ্যা রাতে পটুয়াখালী বিএনপির কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: পটুয়াখালীতে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংস সরকার কুট্টির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার (০২ নভেম্বর) রাত সোয়া ৮টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। বিএনপি দাবি করেছে যুবলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা ভাঙচুর চালিয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। তবে যুবলীগ বলছে, তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। দলীয় কোন্দলের জের ধরে বিএনপির কর্মীরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সাংবাদিকদের কাছে বিএনপির কার্যালয়ের হামলা ভাঙচুরের এক মিনিট ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এসেছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের বনানী এলাকায় জেলা বিএনপির বন্ধ কার্যালয়ের সামনে জটলা। অন্তত ৮টি মোটরসাইকেল কার্যালয়ের অদূরে রাখা। মোটরসাইকেল থেকে একদল ব্যক্তি দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করছে। তাদের কেউ কেউ ভেতরে থাকা চেয়ার বাইরে ছুড়ে ফেলছেন। বাইরে থাকা ব্যক্তিরা রাস্তায় আছাড় দিয়ে চেয়ারগুলো ভেঙে ফেলছে। তখন আশপাশে দাঁড়িয়ে উৎসুক জনতা সেটা দেখছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলার সঙ্গে সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংস সরকার কুট্টি বলেন, বুধবার সন্ধ্যার পর স্বনির্ভর রোডের আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ১৫ জন নেতাকর্মী নিয়ে দলীয় আলোচনা করছিলাম। রাত তখন সোয়া ৮টা ছুঁই ছুঁই, হঠাৎ জেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে অফিসে ঢুকে পড়েন। মহাসমাবেশ সফল করতে কেন সভা করছি, তা নিয়ে ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে কার্যালয়ে হামলা করে। আমরা আত্মরক্ষার্থে কার্যালয় ফেলে দূরে সরে যাই। তখন হামলাকারীরা কার্যালয়ের ভেতরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
সেখানে ছিলেন পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন। তিনি বলেন, সদস্য সচিবের ব্যক্তিগত অফিসে হামলার পর তারা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে ছুটে যান। তার আগেই দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে সেখানে অবস্থানরত দলীয় নেতাকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। শহরের বনানী এলাকায় জেলা বিএনপির বন্ধ কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। একই সঙ্গে কার্যালয়ের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ভেতরে থাকা চেয়ার বাইরে ফেলে ভাঙচুর করে। দলীয় কার্যালয়ের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে দেয়।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বরিশাল গণসমাবেশের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, পটুয়াখালী বিএনপির কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে যুবলীগের ক্যাডাররা। তাদের হামলায় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। যাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কার্যালয়ের আসবাবপত্র ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করেছে। বিএনপির সদস্য সচিবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। বিভাগীয় টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির বন্ধ কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ ঘটনা হয়ে থাকলে এর দায় জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে।
পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি যে রকম স্বাভাবিক ছিল ওই রকমই আছে। তবে বিএনপি নেতা স্নেহাংস সরকার কুট্টির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে একটু ঝামেলা হয়েছে। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।’
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ।
শিরোনামপটুয়াখালি