বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ অপরাহ্ণ, ২২ অক্টোবর ২০১৬
দেশের বিভিন্ন জেলার ন্যায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দু’দিনব্যাপী ২০তম জাতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন বরিশাল বিভাগের ১০ হাজারেরও অধিক নেতাকর্মী এবং সমর্থক। জাতীয় সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য বিশেষ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশাল জেলা ও মহানগরের ছয় সহস্রাধীক নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে জেলা ও মহানগরের এসব নেতাকর্মীরা লঞ্চ এবং বাসযোগে সম্মেলনের উদ্দেশে বরিশাল ত্যাগ করেছেন। এরমধ্যে লঞ্চযোগেই নগরী থেকে ৬ সহস্রাধীক নেতাকর্মী ঢাকায় গেছেন। বিশেষ সার্ভিসের তিনটি লঞ্চসহ মোট ৮টি লঞ্চে নেতাকর্মীরা বরিশাল থেকে ঢাকায় যাত্রা করেছেন। এদিকে সম্মেলনে অংশগ্রহনের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সকল ব্যয় বহন করছেন নেতৃত্বদানকারী নেতারা। তাদের যাতায়াত, খাওয়া এবং থাকা সকল আয়োজন করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানা গেছে, শনিবার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলন এবং কাউন্সিল। শনিবার জাতীয় সম্মেলন ও আজ ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে কাউন্সিল। তাই কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটার অর্থাৎ কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ছাড়াও সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন সাধারণ নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা। যারা সম্মেলনে অংশগ্রহন করেছেন তাদের প্রত্যেককে দলীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবির বিনিময়ে। শনিবার সকালের মধ্যে সম্মেলনে যোগদানের জন্য নির্ধারিত নেতাকর্মীরা বরিশাল ত্যাগ করেছেন। এজন্য শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই নগরীর লঞ্চ ঘাট এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের ঢল নেমেছিলো। এসময় জয় বাংলার সাথে নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের নিয়ে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা লঞ্চঘাট এলাকা। আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিনত হয় লঞ্চ ঘাট এলাকা। তাদের ঢাকায় পৌঁছে দিতে নিয়মিত লঞ্চের পাশাপাশি তিনটি লঞ্চ বিশেষ সার্ভিস দিয়েছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, সম্মেলন এবং কাউন্সিল উপলক্ষে যারা ঢাকায় এসেছেন তাদের মাঝে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের ১২৪ জন কাউন্সিলর এবং প্রায় আড়াই’শ ডেলিগেট রয়েছে। এরমধ্যে মহানগর থেকে ১৭জন কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট থাকছেন প্রায় ৫০ জন। তাছাড়া জেলা থেকে ১০৭ জন কাউন্সিলর ছাড়াও ডেলিগেট থাকবেন ৫০জনের বেশি নেতা। এরা সবাই আগামী ২৩ অক্টোবর কাউন্সিল শেষে বরিশালের উদ্দেশে ফিরে আসবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার সদর আসনের এমপি জেবুন্নেছা আফরোজ, মহানগর আওয়ামীলীগের নতুন কমিটির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি’র নেতৃত্বে সকল নেতাকর্মীরা সম্মেলনের উদ্দেশে বরিশাল ছেড়েছেন। তবে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনের আয়োজক কমিটিতে থাকায় তারা আগে থেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। শুক্রবার বরিশাল থেকে যতো সংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশ্যে গেছেন তারমধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামীলীগ নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বে বরিশাল ত্যাগ করেছেন। তার নেতৃত্বে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বিশেষ সার্ভিস হিসেবে ছেড়ে যাওয়া এমভি সুন্দরবন-৭ ও পারাবত-২ লঞ্চে ঢাকায় গেছেন। দুটি লঞ্চে চার হাজারের অধিক নেতাকর্মী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বে সম্মেলনে যোগদান করেছেন।
এছাড়া সদর আসনের এমপি জেবুন্নেছা আফরোজ এবং এ্যাডভোকেট আফজালুল করিমের নেতৃত্বে বরিশাল ত্যাগ করেছেন আরো সহস্রাধীক নেতাকর্মী ও সমর্থক। দুই নেতার নেতৃত্বে তারা বরিশাল থেকে সুন্দরবন-৮ লঞ্চে শনিবার সকালে ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এরবাইরে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আরও তিন হাজারেরও অধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বরিশাল ত্যাগ করে সম্মেলনে যোগদান করেছেন। এরমধ্যে সুরভী-৯ লঞ্চেই জেলার বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
এদিকে নেতৃত্ব দেয়া দলীয় নেতারা বলেন, যারা ঢাকায় এসেছেন তাদের আসা যাওয়ার সকল খরচ বহন করছেন কাউন্সিলর এবং ডেলিগেটরা। যারা বিশেষ পরিচয়পত্র পেয়েছেন তারাই মাত্র খাবার এবং আসা যাওয়ার সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকবেন। তাছাড়া অংশগ্রহনকারীদের পাঁচ বেলা খাবারের জন্য দেয়া হয়েছে খাবারের বিশেষ টোকেন।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় কাউন্সিল এবং সম্মেলনের খাবারের আয়োজনে থাকা বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, বরিশাল জেলা ও মহানগর থেকে যারা সম্মেলনে এসেছেন তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম বিল্ডিংএ। অপরদিকে শুধু বরিশাল জেলা ও মহানগর থেকেই নয়; বিভাগের পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা ও পিরোজপুর জেলা থেকেও লঞ্চ এবং বাসযোগে দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী সম্মেলন এবং কাউন্সিলে অংশগ্রহণ করেছেন।