সরকারি অফিসে জাতীয় পতাকা অবমাননা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসারের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলছে।
জানা যায়, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে চলতি মাসের ৯ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের জন্য দেশের সকল সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন সমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার জন্য সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ৯ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
এ উপলক্ষে বিআরডিবি’র দশমিনা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসারের কার্যালয়ে (পল্লী ভবন) কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই ভবনের মূল গেটের সামনে সিড়ির উপরে দক্ষিণ পাশে আনুমানিক সাড়ে সাত ফিট উচ্চতার একটি দণ্ডের উপরের দিক থেকে দেড় ফুট জায়গা ফাঁকা রেখে জাতীয় পতাকা টানানো হয়।
দেখা যায়, ওই দণ্ডের একেবারে নিচে অফিসে প্রবেশের সিড়ির সাথে মানুষের হাটা চলায় পা পড়ে এমন স্থানের সমান্তরালে জাতীয় পতাকার নিচের অংশ রয়েছে। দুমরে মুচরে যাওয়া জাতীয় পতাকাটিতে রয়েছে অসংখ্য ভাঁজ।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন নেটিজেনরা। মোশারেফ হোসেন নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের পবিত্র রক্ত ও তিন লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা একটি সরকারি দপ্তরে অবমাননা হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গণি হাওলাদারের ছেলে ইয়াকুব হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। শিক্ষিত চাকুরিজীবী হয়েও কিভাবে এমন কাজ করে তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। জাতীয় পতাকার এমন অবমাননা যারা করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই রাষ্ট্রীয়ভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
উপজেলার খারিজা বেতাগী গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক এবং আপত্তিকর। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দশমিনা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার এস. এম. আরিফুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমার অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আরব আলী এ ভুল করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে।
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল মুঠোফোনে বলেন, এ ব্যাপারে ওই কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তার অনুলিপি আমাকে দিয়েছে। তার বক্তব্যের উপড় ভিত্তি করে বিভাগীয় বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করবো।
বিভাগের খবর, ভোলা