বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:৩১ অপরাহ্ণ, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সাপ্তাহিক ছুটেতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক হাজার পর্যটক জড়ো হয়েছেন। পর্যটন মৌসুম শুরুতেই পর্যটকের আগমনে খুশি ব্যবসায়ীসহ পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই দুইদিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশানুরূপ পর্যটকের আগমন ঘটেছে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের একমাত্র বেলাভূমি সাগর কন্যা। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা ব্যবসায়ীরা বলছেন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কুয়াকাটায় পর্যটকদের সংখ্যা কমেছিলো। তবে এখন থেকে সামনের দিকে পর্যটক বাড়বে কুয়াকাটায় এমনটাই প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
আবাসিক হোটেল মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটার আবাসিক হোটেলগুলোর কমবেশি কক্ষ বুকিং রয়েছে। ফলে পর্যটকদের পদচারণায় কিছুটা মুখর ছিল কুয়াকাটার সবগুলো পর্যটন স্পট। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কুয়াকাটা সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, নানা বয়সের হাজারো পর্যটক তীরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি করে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন। রোদ ও মেঘের প্রকৃতিতে সমুদ্রের জলে গা ভাসিয়ে ভ্যাপসা গরমে একটু প্রশান্তির পরশ নিতে দেখা গেছে। কেউ কেউ স্পিড বোট, ওয়াটারবাইকে গভীর সমুদ্রে গিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। বয়স্ক পুরুষ-নারী ও শিশু পর্যটকরা সৈকতের ছাতার নিচে বেঞ্চিতে বসে সমুদ্রের তীরে আছড়েপড়া ঢেউ উপভোপ করছেন। সৈকতের বালিয়াড়িতে ভিজা বালু দিয়ে পিরামিড তৈরি করে নিজেকে বন্দী করছেন ক্যামেরার ফ্রেমে।
ঢাকা গাজীপুর থেকে আসা পর্যটক দম্পতি আয়মান -আয়শা বলেন, আমরা সুযোগ পেলেই কুয়াকাটা বেড়াতে আসি। কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের সবসময় বিমোহিত করে। অনেকদিন ধরেই আসবো আসবো করে ভাবতেছিলাম। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে আসতে পারছিলাম না।
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক খলিলুর রহমান বলেন, আমরা ১৫ জনের একটি টিম কুয়াকাটা এসেছি। সাগরের ঢেউয়ের মাঝে গোসল করতে আমার খুব ভালো লাগে। সেজন্য সমুদ্রবর্তী এলাকাগুলোতে প্রায় সময়ই ছুটে যাই। সমুদ্র ভ্রমণের প্রতি দুর্বলতা থাকায় মাঝেমধ্যেই চলে আসি সাগর কন্যা কুয়াকাটায়।
সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকার পাশাপাশি রাখাইন পল্লি, রাখাইন মহিলা মার্কেট, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহার, ঝাউবান, গঙ্গামতির লেক, গঙ্গামতিরচর, কাউয়ারচর, লাল কাকড়ারচর, লেম্বুরবন, আন্ধারনামিক নদীর মোহনা, চর বিজয়, ফরাতারবনসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন মনের আনন্দে হাজারো পর্যটক। ঝিণুক মার্কেট, খাবার হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলোতে বেচাকেনাও রয়েছে চোখে পড়ার মত।
সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, আজ কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক এসেছেন। বেচাকেনা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। এতদিন তেমন কোন পর্যটক ছিলো না । আমরা যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছি, খুব খারাপ সময় পার করেছি। পর্যটক না আসায় কোন বেচা বিক্রিই ছিল না আমাদের। আশা করি সামনের দিনগুলোতে পর্যটক সমাগম আরো বাড়বে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এমএ মোতালেব শরীফ বলেন, দেশের চলমান যেকোন অস্থিরতার প্রভাব সবসময়ই পরে পর্যটন নগরীগুলোতে। এবারও তার বিকল্প হয়নি। গত দুই মাস তেমন কোন পর্যটক কুয়াকাটায় না আসলেও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ছুটির দিন উপলক্ষে মোটামুটি সন্তোষজনক পর্যটক এসেছে কুয়াকাটায়। তবে পর্যটক সামনের দিকে আরো বাড়বে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পুলিশ সুপার আনছার উদ্দিন বলেন, কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর এবং সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সবগুলো স্পটে নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে।’