সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া: আতঙ্ক ও নির্ঘুম রাত কাটছে বিষখালী তীরের বাসিন্দাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। রবিবার সকাল থেকে উপজেলা জুড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে প্রকৃতি অন্ধকার রূপ ধারণ করেছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী ও বরগুনাকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। রাত গভীর হচ্ছে বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থেকে কখনো মাঝারী ধরনের বৃষ্টি এ বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিষখালী তীরের মানুষের আজ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ উপজেলার ৬৪টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৭৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিম্নচাপটি ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এ অঞ্চলের পায়রা ও বিষখালীর মাঝখানে বেতাগী উপজেলায় অবস্থান করছে। এতে মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাংয়ের’ আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিষখালী নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মানুষদের মধ্যে রয়েছে চরম আতঙ্ক। রাত যতই গভীর হচ্ছে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে গেছে। এতে করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর প্রভাবে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বিষখালীর তীরবর্তীরা আতঙ্কে রয়েছে। অতীতের সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা, মহাসেন, ফনীসহ একাধিক ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলের বিষখালীর তীরবর্তী জনসাধারণের প্রাণহানীসহ গবাদিপশু ও কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া কালিকাবাড়ি এলাকায় বিষখালী নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে ১৩ গ্রামের মানুষ। কালিকাবাড়ির বাসিন্দা সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত এক মাস আগে এ এলাকায় বিষখালীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এরপর মেরামত করা হলেও তা নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তবে এ অঞ্চলের মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। ’ মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হওয়ায় বঙ্গোপসাগর এবং তার সংলগ্ন বিষখালী ও পায়রাসহ সব নদীতে ২২ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এ কারণে বরগুনার সব মাছ ধরার ট্রলার উপকূলে অবস্থান করছে। রবিবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিকে আর্শিবাদ হিসেবে দেখছিল উপজেলার কৃষকরা। এ বিষয় নিয়ে কথা হয় কৃষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আবাদি জমিতে পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাদের আশা, বৃষ্টি হলে এ সঙ্কট কমবে।
এছাড়া অনাবৃষ্টির কারণে জমিতে পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমবে। কিন্তু রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের এ ধারণা পাল্টে যায়। বৃষ্টি বেশি হলে ফসলি জমিতে পানি জমে থাকলে ক্ষতি হবে। বিষখালী নদীর তীরবর্তী ঝোপখালী গ্রামের বাসিন্দা সজল মাহমুদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে বিষখালীর তীরে বসবাসকারী ঝোপখালীর বাসিন্দারা আতঙ্কে থাকে। ’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
বরগুনা, বিভাগের খবর