সুদের টাকা দিতে না পারায় কৃষককে তুলে নিয়ে শিকলবন্দি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: নাটোরের গুরুদাসপুরে সুদের টাকা দিতে না পারায় আসাদ আলী (৫৫) নামে এক কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে শিকলবন্দি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মশিন্দা বাহাদুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুদের কারবারি আব্দুল আজিজ (৩৫) তার বাড়ির বারান্দার খুঁটির সঙ্গে ওই কৃষককে বেঁধে রাখেন। ভুক্তভোগী কৃষক আসাদ আলীর বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামে।
জানা গেছে, ২০২০ সালে জমি লিজের শর্তে সুদের কারবারি আজিজের থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন কৃষক আসাদ। প্রথম দুই বছর সুদের টাকা ঠিক মতো পরিশোধ করলেও চলতি বছরের টাকা দিতে পারেনি কৃষক আসাদ। অনেক বার তাগাদা দিয়েও টাকা না পেয়ে আজ সকালে কৃষক আসাদের বাড়িতে গিয়ে তার হাত-পা বেঁধে তুলে নিয়ে আসেন আব্দুল আজিজ ও তার লোকজন। পরে আজিজের বাড়ির বারান্দার খুঁটির সঙ্গে মাজায় শিকল পরিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ওই কৃষককে।
শিকলবন্দি কৃষক আসাদ আলী বলেন, তিন বছর আগে আমি জমি লিজের ভিত্তিতে সুদে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম আব্দুল আজিজের কাছ থেকে। গত দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ এবং আসল ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি তাকে। বাকি ৫০ হাজার টাকা এ বছর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই একটি দুর্ঘটনায় আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাই।
তিনি বলেন, সংসারে স্ত্রী ও দুই মেয়ে আছে। একটি ছেলে ছিলো সে বাড়িতে থাকে না। আমার উপার্জনেই সংসার চলতো। অভাবগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় আজিজের পাওনা টাকাগুলো দিতে বিলম্ব হচ্ছিল। তাই আজ সকালে আজিজ ও তার বাবা আফজাল হোসেন সঙ্গে কয়েকজনকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসেন।
আমি বাড়িতে শুয়ে ছিলাম। আনুমানিক সকাল ৮টার সময় আমাকে জোড়পূর্বক হাত-পা বেঁধে তারা তুলে নিয়ে আসে। এরপর আব্দুল আজিজের বসতবাড়ির বারান্দায় মাজায় শিকল পরিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। টাকা না দিতে পারলে আমাকে ছেড়ে দেবে না বলে জানায়। আমার এই মুহূর্তে টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।
সুদের কারবারি আব্দুল আজিজ বলেন, অনেকদিন পাওনা টাকা ফেরত চেয়েও পাইনি। তাই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে শিকলবন্দি করেছি। যেন পালিয়ে যেতে না পারে। টাকা পরিশোধ করলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে ঘটনাটি আমার নজরে আসলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশ কাউকেই খুঁজে পায়নি। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।
দেশের খবর