উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া:: জাগতিক পাপ মুছে যাবে- এই মনোষকামনায় পূর্ণিমাতিথীতে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ কুয়াকাটায় সমুদ্রে পুন্যস্নান করবেন। করোনাভাইরাসের কারণে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকলেও সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বঙ্গোপসাগরের নীল জলে পুন্যস্নান করবেন পুন্যার্থীরা। পঞ্জিকা মতে রোববার দুপুর ১ টা ৫৪ মিনিটে পুর্ণিমাতিথী শুরু হয়েছে। তা থাকবে আজ সোমবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত। এ তিথিতেই পুন্যার্থীদের গঙ্গাস্নানের সময় নির্ধারন করা হয়। পুন্যের আশায় এ বছরও সৈকতে সমাগম হয়েছে দূর-দূরান্ত থেকে পুন্যার্থী, দর্শনার্থী ও সাধু সন্ন্যাসী। এদের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
এদিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শনিবার রাতে শ্রী শ্রী মদন-মোহন সেবাশ্রমে অধিবাসের মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী শুরু হয়েছে শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাস উৎসব। মন্দির প্রাঙ্গনে স্থাপন ১৭ জোড়া রাধা কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা। এসময় ভাগবত পাঠ, আরতি, উলু ও শঙ্খধ্বনি এবং নাম কীর্তনে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মন্দির প্রাঙ্গণ। কুয়াকাটায় গঙ্গাস্নান শেষে পুর্ন্যার্থীরা রাধা কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবে। তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের কারনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ রাস উদযাপন করা হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার উদ্যোগে মন্দির ও সৈকত এলাকায় ভাসমান টয়লেট, পরিধেয় বস্ত্র পরিবর্তন শেড, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছে দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব, মেডিকেল টিমসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল।
এছাড়া পুরো কুয়াকাটাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব হলেও এতে অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ। কুয়াকাটার সৈকত পরিণত হয় সার্বজনীন উৎসবে। রূপ নেয় সাস্প্রদায়িক সস্প্রীতির উৎসবে এমটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কলাপাড়া মদন-মোহন সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাথুরম ভৌমিক বরিশালটাইমসকে জানান, শনিবার রাতে শ্রী শ্রী কৃষ্ণের রাস উৎসবের অধিবাস সম্পন্ন হয়েছে। এ উৎসব চলবে পাঁচদিন ব্যাপী। করোনা ভাইরাসের কারনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বছর পালন করা হবে রাস উৎসব। ইতোমধ্যেই সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মহিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বরিশালটাইমসকে জানান, গঙ্গাস্নান উপলক্ষে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে সি-সি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। থাকছে সাদা পোষাকে পুলিশের টহল। তবে নো-মাস্ক, নো-সার্ভিস বাস্তবায়নে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বরিশালটাইমসকে জানান, কুয়াকাটায় পুন্যস্নানে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয় একটি নিরাপত্তা বেষ্টুনি তৈরী করা হয়েছে। আশা করি কোন ধরনের সমস্যা হবে না।’
পটুয়াখালি, বিভাগের খবর