সৌদি আরবে প্রবাসী শ্রমিকদের বেতনের বড় একটি অংশ নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন পিরোজপুরের দুই সহোদর। সেখানকার একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় এই দুই ভাই উদাও হয়ে যান। অভিনব এই প্রতারণার শিকার বাংলাদেশি অন্তত ৩০ শ্রমিকের দুই মাসের বেতন নিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় রাবেয়া নামে ওই প্রতিষ্ঠানটির কন্ট্রাকটিং ম্যানেজার বাবুল আবদুল বা তার ভাই বাসেদ সিদ্দিক শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ না রাখার কারণে তৈরি হয়েছে হতাশা।
এমন বাস্তবতায় প্রতারণার শিকার সেই ৩০ বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদিতে এখন অর্ধ অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। নিশ্চিত হওয়া গেছে- লাপাত্তা হয়ে যাওয়া বাবুল মিয়া আবদুল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়শৌলা গ্রামের সিদ্দিক মেম্বরের ছেলে। মূলত এই বাবুলই ‘রাবিকা’ নামক ওই কোম্পানির ম্যানেজার ছিলেন। তিনি সাম্প্রতিকালে দেশে ফেরার আগে সেখানকার দায়িত্ব দেন ছোট ভাই বাছেদ সিদ্দিককে।
যদিও এই বাছেদকে সৌদিতে নেওয়ার ক্ষেত্রেও পাসপোর্ট জালিয়ালি করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হলেও সৌদিতে ব্যবহার করছেন ভারতের পাসপোর্ট। ওই পাসপোর্ট অনুসারে তিনি সৌদিতে নিজেকে ইন্ডিয়ান নাগরিক অভিরাম পরিচয় দিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে- বাছেদ সেখানে দায়িত্ব পালনকালে অন্তত ৩০ শ্রমিকের ১ লক্ষ ৩০ হাজার রিয়াল (বাংলাদেশি টাকার ২৬ লাখ) নিয়ে উদাও হন। প্রথমে ২/৪ মোবাইল ফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা গেলেও পরবর্তীতে আর পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়টি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া অবস্থানরত বাবুল মিয়া আবদুলকে অবহিত করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং পরবর্তীতে শ্রমিকরা তার সাথে যোগাযোগ করতে গেলে মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। ফলে সেখানকার শ্রমিকরা হতাশ হয়ে বরিশাল মিডিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন। ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক শ্রমিক জানিয়েছেন- বাবুল মিয়া আবদুলের ভাই বাছেদ সিদ্দিক এখনও সৌদিতেই অবস্থান করছেন।
কিন্তু মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তাকে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমনকি এই বিষয়টি তার ভাই ম্যানেজার বাবুলকে অবহিত করা হলে তিনিও কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। তবে দুই ভাইয়ের টাকা চুরির এই ঘটনা শাহিন নামে এক বাংলাদেশিকে বিপদে ফেলেছে। এখন দুই ভাইয়ের লাপাত্তা হয়ে যাওয়া নিয়ে তাকেই প্রবাসী শ্রমিকরা দোষারোপ করছে। কারণ এই শাহিনের সাথেই বাবুলের সখ্যতা ছিল। যদিও শাহিন এই বিষয়টি সম্পের্কে মোটেও অবগত ছিলেন না সেই বিষয়টি অনুসন্ধানেই বেড়িয়ে এসেছে।
এদিকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়শৌলায় খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হয়া গেছে বাবুল সেখানে অবস্থান করছেন। কোন ধরনের পুলিশি ঝামেলা এড়িয়ে চলতে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।
এমতাবস্থায় প্রতারণার শিকার শ্রমিকরা দাবি করছেন- বড় ভাই বাবুল মিয়া আব্দুলের যোগাসাযোসেই ছোট ভাই বাছেদ সিদ্দিক অর্থ নিয়ে গাঢাকা দিয়েছেন। খুব শিগগিরই দেশে ফিরে এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে একাধিক শ্রমিক।’
শিরোনামবরিশালের খবর