বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৮:২২ অপরাহ্ণ, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
ভোলায় এক স্কুলছাত্রীর সম্ভ্রমহানির মূল্য ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় গ্রাম্য সালিশ এ রায়ের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে এক সালিশ বৈঠকে সম্ভ্রমহানির মূল্য ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ওই টাকা স্কুলছাত্রীর মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা-মা ভয়ে এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না।
ওই স্কুলছাত্রী ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের মধ্য রতনপুর স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। এ বিষয়ে তার মা জানান, তার মেয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে প্রায় প্রতিদিন মেয়েকে উত্যক্ত করতো ওই এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরাজি বাড়ির প্রভাবশালী আলমগীরের ছেলে কামাল। এ সময় বখাটে কামাল তার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভনও দেখাতো। কিন্তু বিয়ের প্রলোভনে রাজি না হওয়ায় গত এক মাস আগে তার ঘরের ভেতরে ঢুকে মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বখাটে কামাল। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে প্রথমে স্কুল ছাত্রীটি কামালকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু কামাল তাকে বিয়ে করতে টালবাহানা করে। পরবর্তীতে তার মা-বাবাও কামালকে তাদের মেয়েকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করেন। এতেও কামাল রাজি না হওয়ায় তিনি(স্কুলছাত্রীর মা) ৭ নম্বর শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদে একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শুক্রবার রাতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে স্কুলছাত্রীর সম্ভ্রমহানির মূল্য ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ওই টাকা তার হাতে তুলে দেন।
ওই সালিশ বৈঠকে শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ বাছেদ মিয়া, ফয়েজ আহমেদহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্কুলছাত্রীর মা বলেন, এ ঘটনার পর আমি ইউনিয়ন পরিষদে মামলা করেছি। আমরা চেয়েছিলাম ওই ছেলের সঙ্গেই আমার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আমরা গরিব। আর আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে যে ছেলে সেই কামাল এলাকার প্রভাবশালী। তাই ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে এ ঘটনার মিমাংসা করে দিয়েছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে জানতে কামালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাড়িতে গেলে কামালের মা কহিনুর জানান, তার ছেলে কামাল ও স্বামী আলমগীর বাড়িতে নেই। তারা দুজনেই কাজে গেছে। তবে, তার ছেলে কামালের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে কহিনুর বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ বাছেদ মিয়া ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্কুলছাত্রীর সম্ভ্রমহানির ঘটনার মিমাংসার কথা স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর মডেল থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি।