রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একুশতম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে স্কুলজীবনে দেয়াল টপকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কথা স্মরণ করেছেন।
শুক্রবার দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল জীবন থেকে আমি মিছিলে অংশগ্রহণ করতাম। স্কুলের দেয়াল টপকে আন্দোলনে যোগ দিতাম। কলেজ জীবন থেকে সরাসরি রাজনীতি শুরু করি। কিন্তু আমি কখনো চিন্তা করি নাই আওয়ামী লীগের মতো এতো বড় একটা দলের নেতৃত্ব আমাকে নিতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের চলার পথ এত সহজ ছিল না। বিএনপি, জামাত এবং স্বাধীনতাবিরোধী জোট দেশে হত্যা-সন্ত্রাস করেছে। বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় গেলেও সন্ত্রাস করে, বিরোধী দলে থাকলেও সন্ত্রাস করে।
বিএনপির আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সন্ত্রাস অগ্নিসন্ত্রাস। এই অগ্নি সন্ত্রাসে প্রায় ৫০০ মানুষ মারা গেছে, হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৯টি সিট পায়। এ কারণেই তারা নির্বাচনে যেতে পারে না।
আমরা একদিকে সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছি। আমার দেশের মানুষ যাতে নিরাপদে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। দেশকে উন্নত করতে হলে একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা থাকা দরকার। আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার অবর্তমানে ৮১ সালের একটি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। রাজনীতি আমার জন্য নতুন কিছু ছিল না।
এ দেশে তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অবদান স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জন্ম থেকেই মানুষের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছে।
তিনি বলেন, ‘আ. লীগের ওপর আঘাত বারবার এসেছে। ছোট বড় অনেক আঘাত এসেছে। ভাঙনের চেষ্টা করা হয়েছে। সে ভাঙন থেকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এই আওয়ামী লীগ এখন দেশের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী দল।’
বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ টেনে এনে তার কন্যা বলেন, ২০০৮ থেকে ২০১৯ মাত্র এক দশক। এই দশকে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই এক দশকে আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। স্বাধীনতার পরে জাতির পিতা যে কথা বলেছিলেন- ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না হলে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায়’। কাজেই তার নির্দেশনা, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন শেখ হাসিনা। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনের পর ২৫ মিনিট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে। এতে দলীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়। এবারের সম্মেলনে ১৫ হাজার কাউন্সিলর ডেলিগেটসহ আমন্ত্রিত অতিথি মিলিয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ হাজার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও অংশ নেন।
২১তম জাতীয় কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের স্লোগান হচ্ছে, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’।
শিরোনামজাতীয় খবর