বরিশালটাইমস, ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০৬ অপরাহ্ণ, ৩১ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য অস্বাভাবিক নয়। মাঝে মধ্যে কিছু বিরোধের ফলে সম্পর্কের মাধুর্য আরও বাড়ে। তবে এবার সামনে এসেছে বিচিত্র ঘটনা। স্ত্রীকে ফাঁসাতে গাড়িতে গাঁজা রেখেছেন স্বামী নিজে। এরপর উল্টো নিজেই ফেঁসে গেছেন।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্ত্রীকে ফাঁসাতে তার গাড়িতে গাঁজা রেখেছিলেন স্বামী। তবে এতে স্ত্রী কোনো বিপদে না পড়লেও ফেঁসে গেছেন স্বামী নিজেই। এ ঘটনায় ওই স্বামীর চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
আর ঘটনাটি ঘটেছে সিঙ্গাপুরে। অভিযুক্ত ওই স্বামীর নাম তান জিয়াংলং। ২০২১ সালে বিয়ে করেন তিনি। তবে একই বছরে আলাদা হয়ে যান তারা। জানা গেছে, নিজেরা আলাদা হয়ে গেলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদেরে আবেদন করতে পারছিলেন না। কেননা দেশটির আইনানুসারে তিন বছর না হলে কেউ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন না। এজন্য তিনি এমন ফন্দি এঁটেছিলেন।
তানের ধারণা, স্ত্রীকে কোনো অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিতে পারলে তিনি হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের সুযোগ পাবেন। এজন্য পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুসারে কাজও শুরু করেছিলেন তান জিয়াংলং। স্ত্রীর গাড়ির পেছনে যাত্রীর আসনের মাঝখানে আধা কেজির বেশি গাঁজা রেখে দেন তিনি। কেননা মাদক চোরাচালানে ফাঁসাতে এবং তার মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে এটি যথেষ্ট ছিল। এরপর প্রেমিকাকে স্ত্রীকে ফাঁসাতে তিনি ‘নিখুঁত অপরাধ’ করেছেন বলেও ম্যাসেজ করেন।
বিশ্বের অন্যতম কঠোর মাদকবিরোধী আইনের দেশ সিঙ্গাপুর। মাদকসংশ্লিষ্ট অপরাধ ঠেকাতে এ ধরনের আইনগুলো জরুরি বলে দাবি দেশটির সরকারের। দেশটিতে মাদকের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে সাজার ধরন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।সিঙ্গাপুরে সাধারণত মাদক বহনকারীকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে মাদক চোরাচালানের জন্য দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। তান গত ১৬ অক্টোবর অনলাইনে গাঁজা কেনেন। এরপর তা যেন ৫০০ গ্রামের বেশি হয় এজন্য নিজে মেপেও দেখেন। এরপর স্ত্রীর গাড়িতে রেখে দেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তান জানতেন না যে তার স্ত্রীর গাড়িতে নজরদারি ক্যামেরা রয়েছে। যার মাধ্যমে গাড়ি পার্কিংয়ে রেখেও কি হচ্ছে তা তিনি জানতে পারেন। গাড়ির ক্যামেরা পরীক্ষা করে স্বামীকে গাড়ির পাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। এরপর তিনি পুলিশে অভিযোগ জানান।
পুলিশ তদন্ত চলাকালে তার গাড়িতে তল্লাশি চালায়। মাদক রাখার অভিযোগে এ সময় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ তানের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। তানের আইনজীবী জানান, অপরাধ করার সময় তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। তবে আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেন।
চিকিৎসকের দেওয়া তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন না বলে নিশ্চিত করেন। বৃহস্পতিবার আদালত এ ঘটনায় তানের তিন বছর ১০ মাসের কারাদণ্ড দেন। আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, বিচারিক প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা ও বিচারের আগেই দোষ স্বীকার করায় তার সাজা অপেক্ষাকৃত কম দেওয়া হয়েছে।