বার্তা পরিবেশক, অনলাইন::: পাকিস্তানের পুলিশ বলছে, একটি হাসপাতালে সহিংস বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় গ্রেফতারের জন্য প্রধানমমন্ত্রী ইমরান খানের ভাতিজা হাসান নিয়াজিকে খোঁজা হচ্ছে।
ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলেও বিবিসির খবরে জানা গেছে। পুলিশ ইতিমধ্যে তার বাসভবনে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু তিনি পলাতক রয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে শহরের একটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে লন্ডভন্ড করে দিয়েছেন নিয়াজিসহ কয়েকশ আইনজীবী। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দাঙ্গা পুলিশকেও ডাকা হয়েছিল।
ছবিতে দেখা গেছে, স্যুট-টাই পরা আইনজীবীরা হাসপাতালের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে বিভিন্ন জিনিসপাতি ভাঙচুর করছেন। এ ঘটনায় দেশটিজুড়ে ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়েছে।
হাসান নিয়াজির অংশ নেয়ার ছবি ও ভিডিও ব্যাপকভাবে সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসময় আইনজীবীদের এহেন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন লোকজন।
পাঞ্জাবের হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে (পিআইসি) সহিংসতায় অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইমরান খানের ভাতিজা। টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, পিআইসিতে হামলার কিছু সময় পরেই পুলিশ মারধর ও ভাঙচুরে অংশ নেয়া অসংখ্য আইনজীবীকে আটক করে ও ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়।
তারা পরে আদালতে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনও জমা দেয়; কিন্ত এ প্রতিবেদনে হাসানের নাম না থাকায় শুরু হয় সমালোচনা।
প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ার কারণেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগও আনে।
বিভিন্ন ছবিতে হাসানকে দেখা গেলেও পুলিশের প্রতিবেদনে তার নাম নেই কেন, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ সন্তোষজনক কোনো জবাব দেয়নি।
লাহোরের পুলিশ পরে জানায়, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে হাসানকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নভেম্বরে পিআইসির কর্মীরা কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন- এমন অভিযোগে তাদের সহকর্মীরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন।
কিন্তু মঙ্গলবার আইনজীবীদের নিয়ে মজা করে সামাজিকমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন এক চিকিৎসক। এর পরপরই কয়েকশ আইনজীবী বুধবার পিআইসি হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলা চালায়।
আতঙ্কিত চিকিৎসক ও প্যারামেডিকরা হামলার হাত থেকে বাঁচতে রোগীদের ফেলে রেখেই পালিয়ে যান বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
সহিংসতা বন্ধে দাঙ্গা পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়েছে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হাসপাতালে হামলার ঘটনায় পুলিশ ৮০ জনের বেশি আইনজীবীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে; ৪৬ জনকে নেয়া হয়েছে রিমান্ডে। এর প্রতিবাদে আইনজীবীরা শুক্রবার দেশজুড়ে ধর্মঘটও করেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে হাসপাতালে আইনজীবীদের নজিরবিহীন এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
পুলিশের মুখপাত্র ওয়াসিম ভাট বলেন, লাহোরে তার বাসভবনে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
Other