৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

১২ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৩২ অপরাহ্ণ, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

বরিশাল: বরিশালে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে জলদস্যু খোকাবাবু বাহীনির ১২ সদস্য । সোমবার বেলা ১২টায় র‌্যাব ৮’র সদর দপ্তরে আয়োজিত জলদস্যুদের আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তাছে তারা আত্মসমর্পণ করেন।

আত্মসমর্পনকারীরা হলেন- খোকাবাবু বাহিনীর প্রধান কবিরুল ইসলাম ওরফে খোকাবাবু (৩৩), আমিনুল ইসলাম (৩২), মো. শাহজাহান গাজী (৩০), মো. আবদুল আজিজ(৪৪), মো. মিজানুর রহমান (৩৬), মোঃ রবিউল ইসলাম (২৫), মোঃ ওসমান গনি (৩৩), মোঃ রফিকুল গাজী (৩৩), মোঃ ইয়াছিন আলি গাজী (২৫), মোঃ মহিদুল ইসলাম (৩৩), মোঃ মজিবর রহমান(৩৮) ও মো. কালাম (৩৫)।

এদের সকলের ঠিকানা খুলনার সাতক্ষীরার শরা, কালিঞ্চি, পাইস্যাখালি, শ্রীরামপুর ও তুজলপর গ্রামে।

আত্মসর্মপণকালে জলদস্যুরা ৬টি বিদেশি এক নালা বন্দুক, ৪টি বিদেশি দোনালা বন্দুক, ১টি পয়েন্ট ২২ বোর বিদেশি এয়ার রাইফেল, ৬টি সাটারগান, ২টি এয়ারগান, ২টি শুটার গান এবং ১টি কাটার গানসহ মোট ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সকল প্রকার অস্ত্রের ১০০৩ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়।’

জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বরিশাল ১ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্, বরিশাল ২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস, বরিশাল ৫ আসনের সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজ, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)’র মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ এবং বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক খান আলতাফ হোসেন ভুলু।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র‌্যাব ৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ইফতেখারুল মাবুদ।

জলদস্যু খোকাবাহীনির আত্মসমর্পন উপলক্ষ্যে র‌্যাব ৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির সাংবাদিকদের বলেন- খোকাবাবু বাহিনীর প্রায় সকল শীর্ষস্থানীয় জলদস্যু অতি অভিজ্ঞ এবং দুর্ধর্ষ প্রকৃতির অপরাধী। সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন থানায় তাদের নামে/বেনামে একাধিক মামলা রয়েছে। র‌্যাব ৮ কতৃক সকল গোয়েন্দা তথ্যের যোগসূত্র নির্নয়ের পর পরই সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে জলদস্যুবিরোধী অভিযানের মাত্রা আরও জোরদার করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে খোকাবাবু বাহিনীর সদস্যরা নিজ ভুল বুঝতে পেরে অস্ত্র এবং গোলাবারুদসহ আইনের কাছে নিজেদেরকে সোপর্দ করতে ইচ্ছা পোষণ করে।

মেজর আদনান কবির জানান- র‌্যাব প্রতিষ্ঠা হতে এ পর্যন্ত সফল অভিযানে ৬৫২টি অস্ত্র, ১৮,০৫৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধারসহ ২২৬জন জলদস্যু/বনদস্যুকে গ্রেফতার করে আইনের আওয়াতায় নিয়ে আসে। ফলে সুন্দরবন কেন্দ্রীক বনদস্যু/জলদস্যু বাহিনীর অপতৎপরতা বহুলাংশে কমে আসে। সাধারণত ইলিম ও শুটকি মৌসুমকে কেন্দ্র করে জলদস্যুরা তাদেও ডাকাতি, জেলে অপহরণ এবং অপহরনের মাধ্যমে মুক্তিপন আদায়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ইলিশ এবং শুটকি মৌসুমে জেলেদের যাতে কোন সমস্যায় না পরতে হয় এ জন্য জলদস্যু দমনে বিশেষ অভিযান জোরদার করা হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩১ মে সুন্দরবনের জলদস্যু মাস্টার বাহিনীর ১০জন সদস্য, ১৪ জুলাই মজনু ও ইলিয়াস বাহিনীর ১১জন সদস্য, ৭ সেপ্টেম্বর আলম ও শান্ত বাহিনীর ১৪জন সদস্য এবং ১৯ অক্টোবর জলদস্যু একটি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেন।  সর্বমোট ৬টি বাহিনীর ৪৮জন জলদস্যু, ১১৭টি অস্ত্র ও ৬৫২৮ রাউন্ড গোলাবারুদসহ সর্বশেষ ৬ মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেন।

25 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন