আগামী ৩১ জানুয়ারির দেখা যাবে ‘ব্লাড মুন’ তথা রক্তিম বর্ণের চাঁদ। এই সময় তিনটি বিশেষ ঘটনা ঘটবে একসঙ্গে- সুপার মুন, চন্দ্রগ্রহণ ও ব্লু-মুন। চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এলে সেটিকে ‘সুপার মুন’ বলে অভিহিত করা হয়। ওইসময় চাঁদ স্বাভাবিকের চাইতে ১৪ শতাংশ বেশি বড় দেখা যায়। আর একই মাসের মধ্যে দুটি পূর্ণিমা দেখা গেলে তাকে দ্বিতীয় পূর্ণিমাটিকে বলা হয় ব্লু মুন বলা হয়।
একসঙ্গে তিনটি মহাজাগতিক ঘটনা বিরল। কিন্তু, ব্লাড মুন বা রক্তিম বর্ণের চাঁদ কোনো বিশেষ ঘটনা নয়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন- চন্দ্রগ্রহণের সময় বরাবরই চাঁদ লাল রং ধারণ করে, শুধু রঙের গাঢ়ত্বের হেরফের হয়। এতে চাঁদের কোনো কিছুই পরিবর্তিত হয় না, বরং পৃথিবীর বাতাসকে আমরা কতটা দূষিত করেছি তা বুঝা যায়।
চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ গাঢ় লাল ধারণ করলে বুঝতে হবে বাতাসে প্রচুর পরিমাণে ধুলিকণা ভাসছে। ডুবে যাওয়ার সময় সূর্যকেও একই কারণে লাল মনে হয়।
চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ দেখতে পাওয়ার কথা নয়। কারণ, এসময় চাঁদের গায়ে সূর্যের আলো পৌঁছতে বাঁধা দেয় পৃথিবী। এসময় চাঁদ কালো রঙের মনে হওয়ার কথা। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে বিক্ষিপ্ত আলোর কারণে চাঁদকে হালকা বা গাঢ় লাল মনে হয়। রঙের গাঢ়ত্বের হেরফের হলেও গ্রহণের কালে চাঁদ সমসময়ই লাল হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে ব্লাড মুন প্রায় ১৫০ বছর পর দেখা গেলেও ভারত ও পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় ১৯৬৩ ও ১৯৮২ সালে ব্লাড মুন দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, প্রাচীন ভারতের গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্ট ৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে ব্লাড মুন দেখার বর্ণনা দেন ও চাঁদের রক্তিম বর্ণের জন্য বায়ুমণ্ডলের ধুলিকণাকে দায়ী করেন।
পৃথিবীর ছায়ার আড়ালে এলে চাঁদের উজ্জ্বলতা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। এসময় পৃথিবীর বাতাস ফিল্টারের মত কাজ করে। বায়ুমণ্ডলের ধুলিকণা সূর্যরশ্মিকে বিক্ষিপ্ত করে ছড়িয়ে দিলে বর্ণালীর কেবল লাল আলো বায়ুমণ্ডল ভেদ করে বেরিয়ে যেতে পারে। ওই লাল আলো চাঁদের গায়ে প্রতি ফলিত হওয়ায় সেটিকে লাল মনে হয়।’
বিশেষ খবর