১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

আজব কাণ্ড: নাচতে নাচতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, ২৬ জুন ২০২১

আজব কাণ্ড: নাচতে নাচতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> একটা মানুষ একটানা কতক্ষণ নাচতে পারে? চেষ্টাচরিত্র করলে দুই/তিন ঘণ্টা হয়তো নাচতে পারেন কেউ কেউ। কিন্তু তাই বলে দিনের পর দিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে নাচছিলেন এক দল মানুষ। সেই নাচ থেমেছিল মৃত্যুর পর!

অবাক লাগলেও ঠিক এমনটাই ঘটেছিল ইতালির রোমে। ঘটনার শুরু ১৫১৮ সালের জুলাই মাসে। তৎকালীন রোম সাম্রাজ্যের স্ট্রাসবুর্গ শহরে হঠাৎ করেই নাচ শুরু করেছিলেন লেডি ত্রোফিয়া নামে এক নারী। একদিন, দুইদিন করে সপ্তাহ পার হলেও ত্রোফিয়ার নাচ তো থামেইনি উল্টো তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আরও অনেক মানুষ।

শাসকরা এই অদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় শেষ নাচিয়েদের জন্য একটি টাউনহলের ব্যবস্থা করেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন টাউনহলে নাচতে নাচতে একসময় দুর্বল হয়ে পড়বে মানুষ। থেমে যাবে নাচ। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। নাচতে নাচতে সেরিব্রাল স্ট্রোক আর হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে মারা যান কয়েকজন। তারপরও অন্যরা থামেনি। মৃত্যু অবধি চলতে থাকে তাদের নাচ।

সে সময়কার চিকিৎসকের পরামর্শপত্র, ক্যাথেড্রালের শমন, স্থানীয় এবং আঞ্চলিক প্রজ্ঞাপন, এমনকি স্ট্র্যাসবুর্গ সিটি কাউন্সিলের জারি প্রজ্ঞাপনেও এই অদ্ভূত নাচের উল্লেখ আছে। অনেকে একে ড্যান্স প্লেগও বলেছেন।

তবে ঠিক কত জন মানুষ এভাবে নাচতে নাচতে মারা গিয়েছিলেন তার সঠিক সংখ্যা কোথাও উল্লেখ নেই। ধারণা করা প্রায় ৫০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এভাবে।

তবে কেন মানুষ এভাবে নাচতে নাচতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন তা নিয়ে নানা ধারণা প্রচলিত আছে। এনিয়ে বই লিখেছেন জন ওয়ালার নামে এক ব্যক্তি। সে সময় নাচের কারণ হিসেবে কালো জাদুর মতো অপ্রাকৃতিক বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করা হলেও আধুনিক বিজ্ঞানী এসব তত্ত্ব নাকচ করে দেয়।

তাদের ধারণা, সে সময় বিশেষ কোনো খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ার মানুষের মধ্যে মানসিক বিকার দেখা দেয়। যার ফলে মানুষ এ রকম অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে।

আবার কেউ কেউ এর পেছনে গণ-হিস্টিরিয়াকে দায়ী করেছেন। তবে এসব তত্ত্বের সবই অনুমান। এর পেছনের সঠিক কারণও আজও জানা যায়নি। আজও পৃথিবীর অমীমাংসিত রহস্যের তালিকায় অন্যতম এই নাচতে নাচতে মৃত্যুর ঘটনা।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন