২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

আ’লীগে ৪ হেভিওয়েট ‘গডফাদার’ চিহ্নিত?, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনার অপেক্ষা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৩২ অপরাহ্ণ, ১২ নভেম্বর ২০১৯

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ অন্তত চারজন নেতার নাম শুদ্ধি অভিযানে চলে এসেছে। এই চারজনই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা। এদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো বাণিজ্য, টেণ্ডার বাণিজ্য, দুর্নীতি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে শুদ্ধি অভিযানে যে সমস্ত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের কাছে থেকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যে এই চার নেতার নাম উঠে এসেছে।

এদের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। দুইজন সম্পাদক পর্যায়ের নেতা। একজন কেন্দ্রীয় নেতা। এদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছে এবং শুদ্ধি অভিযান এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে এদেরকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে- এরাই ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া, জিকে শামীমের গডফাদার। আওয়ামী লীগকে নিষ্কলুষ করতে এই নেতৃবৃন্দকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন এবং তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তবে সরকার এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেই জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে দলে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেন। ওই দিনই তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। এরপরে যুবলীগের খালেদ গ্রেপ্তার হন এবং এই ধারায় ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, জিকে শামীমমহ আর কয়েকজন আইনের আওতায় আসে। একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। ১৭৩ জনের বিদেশ যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

শুদ্ধি অভিযানের এই পর্যায়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একাধিক মামলা দায়ের করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে জিজ্ঞাসাবাদে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। এবং তাদেরকে কারা পৃষ্ঠপোষকতা দিতেন সেগুলো এখন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হাতে। এই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তারা একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। প্রতিবেদনটি খুব শীঘ্রই প্রধামন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জানা গেছে যে, প্রতিবেদনে এই সমস্ত আটক দুর্বৃত্তদের গডফাদার হিসেবে আওয়ামী লীগের চার প্রভাবশালী নেতার নাম উঠে এসেছে। এছাড়াও প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলেও এদের পৃষ্ঠপোষক ছিল বলে জানা গেছে। যারা এদের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন তাদের একজন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের প্রভাবশালী নেতা।

শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর থেকেই তিনি দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন এবং তাকে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর দুজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে তারা এ সমস্ত দুর্বৃত্ত এবং ক্যাসিনো বণিজ্যের হোতাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, মদদ দিয়েছেন এবং তাদের ছত্রছায়াতেই এরা বেড়ে উঠেছে। এদের দুই জনই গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন। তবে নির্বাচন বঞ্চিত হলেও তাদের সঙ্গে আওয়ামীলীগ সভাপতির সুসম্পর্ক রয়েছে এবং দলীয় কার্যক্রমে তারা এখনো সক্রিয় রয়েছে। আরেকজন দলীয় নেতা কেন্দ্রীয় কার্যক্রমে তেমন সক্রিয় নন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে শুদ্ধি অভিযানের এই পর্যায়ে এই চারজনসহ আরো যারা এই সব দুর্বৃত্তদের পৃষ্টপোষকতা দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। শুধু এক্ষেত্রেই নয়, অনুপ্রবেশকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক নেতার নাম উঠে এসেছে। এখন এদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বা শুদ্ধি অভিযান কোন প্রক্রিয়ায় এগুবে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চাইবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী আগামী পুরো সপ্তাহ একটা ব্যস্ত সময় কাটাবেন। তারপর হয়তো এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হবে। তখন শুদ্ধি অভিযান নাটকীয় মোড় নিতে পারে।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন