২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

আ’লীগ নেতার ইজ্জত রক্ষায় কাউনিয়া পুলিশ পেরেশান!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৩৩ পূর্বাহ্ণ, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

ওয়ার্ড ছাত্রলীগের এক কর্মীকে আহত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরিশাল কাউনিয়া থানা পুলিশের এখন ঘুম হারাম। এই অভিযোগ প্রতিষ্ঠায় অনেকটা চাপের মুখে পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হওয়ার পর আসামি খুঁজতে রাতভর অভিযান চালিয়ে অন্তত ১১ জনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘটনা উত্তর আমানতগঞ্জের কিন্তু পুলিশের এই অভিযানে গোটা কাউনিয়া এলাকায় তরুণদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাও আবার ছাত্রলীগের নেতাকর্মিদের মধ্যেই। কারণ আহত রিমনের সহযোগীরা এই হামলার সাথে জড়িত।

শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলের এই হামলা অতটা গুরুতর না হলেও বিষয়টি মহানগর আ.লীগের ইজ্জতের কারণ হয়ে দেখা দেয়ায় ঘটনার বহুদূর গড়িয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে- অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে সৃষ্ট এ ঘটনায় একটি পক্ষকে ঘায়েল করতে ব্যবহার করা হচ্ছে পুলিশকে। আ.লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা ফোনে থানা পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়ার পরই রাতেই মাঠে নামতে বাধ্য হয়। এ তথ্য একাধিক সূত্রে প্রাপ্ত।

ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়- ছাত্রলীগ রাজনীতিতে সক্রিয় রিমন ও রেদওয়ান এই দুই তরুণ একই সাথে থাকলেও ঘটনাচক্রে দুজনার মধ্যে কোন এক কারনে মতোবিরোধ দেখা দেয়। তার জের ধরে রেদওয়ান তার দুই সঙ্গিকে নিয়ে রিমনের উপর হামলা চালায়।

শুক্রবার পড়ন্ত বিকেলে রিমন উত্তর মানতগঞ্জ এলাকা সংশ্লিষ্ট আল মদিনা সড়কের আসামাত্র হামলার শিকার হয়। আহত তরুন প্রথমেই স্বীকারোক্তি দিয়েছিল ঘটনার সাথে ৩জন জড়িত। পরে বিষয়টি রাজনীতির ভিন্ন ধারায় মোড় নেয় বলে একটি মহলের অভিযোগ। তাদের দাবি, রিমন মহানগর আ.লীগর মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের একান্ত সহচর। বিপরিতে রেদওয়ান স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতার অনুসারী। মহানগর আ.লীগ নেতার সাথে ওই ছাত্রলীগ নেতার মতবিরোধ এ ঘটনায় প্রাধান্য পায়েছে। ফলশ্রুতিতে রিমনের আহতকে গুরুত্বর দেখিয়ে রাতেই পুলিশকে মামলা গ্রহণে একটি দিকনির্দেশনা দেয়া হয়।

পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য স্বীকার করে জানায়- মামলা দায়ের অপেক্ষা ওই ছাত্রলীগ নেতার অনুসারীদের আটকে চাপ আসে। নিরব হোসেন টুটুল এ ঘটনায় প্রকাশ্যে ভূমিকা না রেখে প্রভাবশালী এক আ.লীগ নেতাকে ব্যবহার করে পুলিশকে দৌড়ের উপর রাখে।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে- কৌশলগত কারণে রাতে মামলা দায়ের না করেই পুলিশ অভিযানে নেমে তালিকা অনুযায়ী খুঁজতে থাকে কিছু তরুণদের। শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ ১১ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশের বাড়ি উত্তর আমানাতগঞ্জ এবং ভাটিখানা এলাকায়। অথচ হামলায় অংশ নেয়া রেদওয়ানসহ অপর দুই তরুণের হদিস পায়নি পুলিশ।

কিন্তু যেভাবে পুলিশ শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালানোর ধরণ দেখে মনে হয়ে ছিল বড় ধরণের কিছু ঘটেছে। কাউনিয়া থানা পুলিশের বক্তব্য এই সংঘাতের ঘটনা নিয়ে বড় ধরণের অঘটন রোধেই আইনগত পদক্ষেপ নিতে এই তোড়জোর। কিন্তু অপর একটি সূত্রের দাবি এ সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের হয় গতকাল দুপুরে। আহত রিমনের পিতা উত্তর আমানাতগঞ্জের বাচ্চু সিকদার বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে দায়ের করা মামলায় আরও ২৯ জনকে অজ্ঞাত হামলাকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে।

খবর পাওয়া গেছে- এই হামলার ঘটনায় কাউনিয়া এলাকায় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের একটি অংশের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন