২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

আ’লীগ নেতার নির্দেশে হৃদয়ের ওপর হামলা করে কিশোর গ্যাং!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০৮ অপরাহ্ণ, ২৬ মে ২০২০

বার্তা পরিবেশক, বরগুনা:: বরগুনায় ঈদের দিন বিকেলে নদীর তীরে বেড়াতে গিয়ে খুন হওয়া হৃদয়ের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার নির্দেশে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি। গতকাল ঈদের দিন সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল ঈদের দিন বিকেলে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গুলবুনিয়া পায়রা নদীর তীরে বেড়াতে গিয়েছিলাম। গুলবুনিয়া নদীর তীরে তখন কয়েকশ মানুষের ভিড় ছিল। এ সময় কোনো একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। হঠাৎ সেখানে উপস্থিত থাকা ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিক কাজি উত্তেজিত ছেলে-পেলেদের হৃদয় ও তার বন্ধুদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন। এরপরই ১৫ থেকে ২০ জন হামলাকারী হৃদয়সহ তার বন্ধুদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।

অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, লাঠি হাতে কিছু উত্তেজিত ছেলেপেলে দেখে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে নিয়ে যাওয়া শুরু করি। তখন আওয়ামী লীগ নেতা রফিক কাজি লাঠি হাতে ছেলেদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ধর, ওদের ধর’। এরপরই শত শত মানুষের সামনে ওই ছেলেরা বেশ কয়েকটি ছেলেকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরপর আজ খবর পাই আহতদের মধ্যে হৃদয় নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে।

গুলবুনিয়ার এক স্থানীয় অধিবাসী বলেন, গোলবুনিয়া ব্লক ইয়ার্ড একটি পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। বিশেষ বিশেষ দিবস ছাড়াও এখানে সাধারণ মানুষ অহরহ বেড়াতে আসেন।

তিনি বলেন, এখানে শহর থেকে তরুণ-তরুণীরা ঘুরতে গেলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিক কাজিসহ তার ভাই কনু কাজির ছেলে নোমান, স্থানীয় আলতাফ মৃধার ছেলে হেলাল, লিটন হাওলাদারের ছেলে নয়নসহ আবীর এবং তনিক ও তাদের সহযোগীরা তরুণ-তরুণীদের নানাভাবে হয়রানি করে। এরই ধারাবাহিকতায় হৃদয় হত্যার ঘটনা ঘটে বলেও তিনি জানান।

তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রফিক কাজির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, গতকাল বিকেলের এই ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, হামলায় নিহত হৃদয়ের মরদেহ এখন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মরদেহের সঙ্গে রয়েছেন তার মা ও বাবা। তাই এ ঘটনায় তারা এখন পর্যন্ত মামলা করতে পারেননি। মরদেহ নিয়ে বরগুনায় ফেরার পর তারা মামলা করবেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, হৃদয়ের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন