২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

আশ্রয়কেন্দ্রে যামু না, আল্লাহ নিলে লইয়া যাক

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:০১ অপরাহ্ণ, ১৯ মে ২০২০

বার্তা পরিবেশক বরগুনা :: দুদিন ধরে বরগুনা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘুম নেই। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন জেলার প্রায় সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবী। তাদের অনুরোধ একটাই; ঝড় শুরুর আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার। গত দুদিনের প্রচেষ্টায় তাদের এই অনুরোধ পৌঁছে গেছে বরগুনার মানুষের ঘরে ঘরে।
জেলাজুড়ে এত প্রচার-প্রচারণার পরও যাদের এখনও টনক নড়েনি তাদের একজন বরগুনা সদর উপজেলার বৃদ্ধা সালেহা বেগম (৬৫)। মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেলে বরগুনার আকাশে যখন মেঘের ঘনঘটা; তখন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে ফেরার পথে বৃদ্ধা সালেহা বেগমের সঙ্গে দেখা হয়।
আশ্রয়কেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে বৃদ্ধা সালেহা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে যামু না, আল্লাহ যদি নিতে আয়, লইয়া যাক।’
বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, বরগুনায় এরকম সালেহা বেগমদের অভাব নেই। ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের অধিকাংশই আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি। তারা প্রশাসনের অনুরোধ শোনেননি।
মনির হোসেন কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময় যারা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছেন, পরবর্তীতে আমরা তাদের লাশ দেখতে পেয়েছি। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সিডরের মতোই শক্তিশালী। যেহেতু আমরা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছি না, তাই খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, পোটকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গোলবুনিয়া শিশু-কিশোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র তিনটি একেবারে ফাঁকা। ফাঁকা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পাহারা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওবং কর্মচারীরা।

পোটকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মচারী রুহুল আমিন বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে গত দুইদিন ধরে আমরা স্কুল খুলে পাহারা দিচ্ছি। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এখানে কোনো আশ্রয়প্রার্থী আসেননি।

এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ইতোমধ্যে বরগুনার সাধারণ মানুষকে আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। বরগুনায় ৬১০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ইফতারের পাশাপাশি রাতের খাবার ও সাহরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যার আগেই সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে বলেছি। আমাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা নিরাপদ আশ্রয়ে যাবে না, তাদের খুঁজে বের করে ধরে ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন