১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ইভিএমে ভোট নিয়ে আ’লীগ নেতার বিতর্কিত মন্তব্য: তদন্ত শুরু

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩১ অপরাহ্ণ, ০২ আগস্ট ২০২২

ইভিএমে ভোট নিয়ে আ’লীগ নেতার বিতর্কিত মন্তব্য: তদন্ত শুরু

মো. জসীম উদ্দিন, বাউফল:: আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারানায় আওয়ামী লীগ নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচন স্থগিত হওয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) সরেজমিন তদন্ত করতে আসবেন বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং ও বাউফল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম। তদন্তের এ বিষয়টি বাউফল প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।

গত ২৩ জুলাই আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুকের উপস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচারনার একটি উঠান বৈঠকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক ওরফে রাসেল বলেছিলেন ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। অতএব ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, টেনশনেরও কিছু নাই।’ এমন বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে ভাইরাল হয়। যা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইলেট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়।

আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্য নিয়ে সব মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। বিব্রত বোধ করেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। আর সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। যা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নজরে আসার পর চেয়ারম্যান পদের ভোট স্থগিত করে গত ২৫ জুলাই (সোমবার) প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের সরেজমিন তদন্তের খবরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমেছে। তাঁরা (আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা) সাক্ষী না দেওয়ার জন্য সাধারন ভোটারদের চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন,‘এমনিতেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সাক্ষী না দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। আর যেখানে ভিডিও আছে। সেখানে তদন্তের কি আছে? তাঁদের (আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থক) সামনে সাক্ষী দিলে এলাকায় থাকতে পারবো এমন নিশ্চয়তা কে দেবে?’

এদিকে ভোট স্থগিত হলেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত শুক্র ও শনিবার অটোগাড়িতে করে নৌকার পক্ষে মাইকিং করা হয়। এ বিষয়েও চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম মহসীন রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন,‘খবর পেয়ে মাইকিং বন্ধ করা হয়েছে। সব বিষয়ের তদন্ত হবে।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. আমির হোসেন ব্যাপারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি শপথ নেওয়ার আগেই ১৯ ফেব্রুয়ারি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। একই ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মিজানুর রহমান ৩ মার্চ মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মারা যান। এ কারণে ওই শূন্য দুটি পদে ২৭ জুলাই উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। মোট ছয়জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত হলেও ২৭ জুলাই (বুধবার) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

 

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন