২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ইলার পরকীয়া প্রেম কাহিনী, উলাল বাটনায় সরস আলোচনা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২২ অপরাহ্ণ, ২৬ জুলাই ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বিবাহিত তরুণী ইলার প্রেম কাহিনী যেনো বাংলা চলচ্চিত্রের কাহিনীকেও হার মানিয়েছে। শুধু শ্বশুরালয় নয়, পুলিশকেও দৌড়ের উপর রেখেছে। পরকীয়ায় মশগুল সুদর্শনা অষ্টদশি ইলা কোন ভাবেই স্বামী সুমন হাওলাদারকে মানতে নারাজ। অবশেষে নাটকীয় কায়দায় শ্বশুরালয় থেকে বাবার বাড়িতে যাওয়ার নাম করে পালিয়ে যায় প্রেমিক নাজমুলের উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইলে। বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে শ্বশুর খালেক হাওলাদার ইজ্জত রক্ষার আকুতি জানালে ইলার অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম হয়। গত তিন দিন পূর্বে টাঙ্গাইলের হাটিভাঙা এলাকা থেকে ইলার পরিবার তাকে নিয়ে আসে কিন্তু আর কতদিন এভাবে চলবে, এমন প্রশ্নে ইলার পরিবারের সাথে খালেক হাওলাদার এখন একটি সুরাহ টানতে চায়। কারন ইতিপূর্বে এভাবে ইলা স্বামীর ঘর ছেড়ে পাঁচদিন পর ফিরে এসেছিলো ।

বরিশালের চরবারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মেম্বার খালেক হাওলাদার সম্মানিত ব্যক্তি হওয়ায় এ ঘটনা চেপে যেতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেও সত্য কী গোপন থাকে? বিষয়টি নিয়ে এখন মুখরোচক আলোচনায় একগ্রাম থেকে আর এক গ্রাম ছাপিয়ে পৌছে গেছে স্থানীয় মিডিয়া অঙ্গনে। একার্ধিক সূত্র এ তথ্য দিয়ে বলছে, স্বামী সুমন হাওলাদার ও ইলা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন। পার্শ্ববর্তী কাশিপুর ইউনিয়নের সারসী গ্রামের বাসিন্দা একজন পুলিশ সদস্যের কন্যা ইলা সম্পর্ক করেই সুমন হাওলাদারকে বিবাহ করে। বছর চার পূর্বে দুই পরিবারের অজান্তে তাদের এই বিয়ে মানতে নারাজ ছিলেন খালেক হাওলাদার। পরবর্তীতে বৌ হিসেবে মেনে নেয়, শুরু হয় ইলা ও সুমনের দাম্পত্য জীবন।

জানা গেছে, সুমন হাওলাদার বরিশাল সদর হাসপাতালের আউটডোরে টিকিট মাস্টার হিসেবে কর্মরত। অনেক সময় নিজে অফিসে অনুুপস্থিত থেকে স্ত্রী ইলাকে নিজের দপ্তরিক কাজে ব্যবহার করতেন। অনেকের ধরনা হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা পূর্ব টিকিট বিক্রির প্রাক্কালে কোন একসময় ঘটনাচক্রে এক যুবকের সাথে ইলার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। সেই সূত্র ধরে একবার ইলা স্বামীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনা ধাঁমাচাঁপা দিতে তখন বলা হয়েছিলো রাজশাহী পুলিশে কর্মরত পিতার কছে ইলা বেড়াতে গেছে। কিন্তু স্থানীয়রা আগে থেকেই জানতো ইলার মায়ের সাথে তার পিতার কোনো সম্পর্ক নেই, আবার বিচ্ছেদও হয়নি। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় এই সুদর্শনা তরুণী ইলা পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে এক যুবকের হাত ধরে অজানা গন্তব্যের পথ ধরে। ইলার পরিবার পাঁচ দিনের মাথায় তার সন্ধান পেয়ে ফিরিয়ে আনে। তখন শ্বশুরালয় লোকলজ্জায় এ ঘটনা মেনে নিয়ে সুমনের সাথে মিলিয়ে দেয়।

অপর একটি সূত্র জানায়, বছর খানেক ধরে ইলা আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে। এবার দেশি নয়, সৌদি প্রবাসি এক যুবকের সাথে মন দেওয়া-নেওয়া শুরু করে। যশোরের বাসিন্দা নাজমুল নামক যুবকের সাথে সেলফোনে রঙ নাম্বারে ফোনাফনিতে পরিচয় হয়। সময়ের আবর্তে দু’জনার সম্পর্ক গভীর হয়ে ওঠে। সম্প্রতি নাজমুলের দেশে ফেরার কথা। পরিকল্পনা অনুযায়ী নাজমুল তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাঙ্গাইলের এক আত্মীয়র বাড়িতে আগেভাগেই চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। প্রেমে উম্মাত ইলা আবারো স্বামীর ঘর ছেড়ে গত ১০ দিন পূর্বে টাঙ্গাইলে চলে যায়।এদিকে ইলার স্বামী ও শ্বশুরালয় বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তার সন্ধানে নামে। একপর্যায় বরিশাল পুলিশ কমিশনারকে এই ঘটনা অবহিত করে শ্বশুর খালেক হাওলাদার কমিউনিটি পুলিশের ইউনিয়ন সভাপতি হওয়ার সূত্রে পুত্রবধূকে উদ্ধারে সহায়তা চায়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, পুলিশ কমিশনার বিমানবন্দর থানার এসি নাছরিন জাহানকে বিষয়টি দেখার আদেশ দেন। পাশাপাশি খালেক হাওলাদার এ সংক্রান্তে থানায় একটি জিডি দায়ের করে। পুলিশ এক পর্যায় ইলা টাঙ্গাইলে রয়েছে তা নিশ্চিত হয়। সেখানেও নাটকীয়তা। নাজমুল ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেননি। ইলা অপেক্ষায় ছিলো নাজমুল আসছে, তবেই বিয়ের পিরিতে বসবে। কিন্ত বিধিবাম। পুলিশের সহায়তায় ইলার ভাই টাঙ্গাইল শহরে হাটুভাংগা সড়কে নাজমুলের নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে আচমকা উপস্থিত হলে ইলা চমকে যায়।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের যে বাড়ি থেকে তাকে উদ্বার করা হয়েছে তাদের ভাষ্য ইলাকে নাজমুলের স্ত্রী হিসেবে জানতো এবং আশ্রয় দিয়েছিলো। এদিকে তরুণী ইলা কোনোভাবেই ফিরে আসতে নারাজ। একপর্যায় কৌশলি ইলা নাজমুলের সাথে সৌদিতে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয় এই মুহুর্তে সে বাংলাদেশে আসতে পারছে না ভিসা জটিলতার কারনে। ফলশ্রুতিতে ইলা তার ভাইয়ের সাথে ফিরে আসে বাড়িতে । এখন শ্বশুরালয় ও স্বামী সুমন বিগরে বসেছে তাকে আর গ্রহণ না করার। কারণ দু’দফা ঘর ছাড়ায় ইলার কারনে সম্মানে টান ধরেছে বিশেষ করে সমাজে পরিচিত মুখ খালেক হাওলাদারের।

সর্বশেষ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ইলা-সুমনকে আবারও একত্রিত করতে দুই পরিবার দফায় দফায় বৈঠকে বসছে। এদিকে ইলাও অনঢ় তিনি আর স্বামীর সংসার করতে নারাজ, যেতে চায় নাজমুলের কাছে, থাকতে চায় তার ফিরে আসার অপেক্ষায়। কি গভীর প্রেম। সঙ্গত কারনে উলাল বাটনা থেকে সারসি গ্রামে কান পাতলে শোনা যায় ইলার প্রেমের মর্মকথা। যদিও দুই পরিবার বিষয়টি ধাঁমাচাপা দিতে নানা কৌশল নিলেও তা আর গোপন থাকেনি।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন