২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ইস্টার আইল্যান্ডে প্রাচীন ভাস্কর্যের রহস্য সন্ধান!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪০ অপরাহ্ণ, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯

চিলির উপকূল থেকে দুই হাজার মাইলেরও বেশি দূরে অবস্থিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ইস্টার আইল্যান্ডের আরেক নাম রাপা নুই। এ দ্বীপের প্রাচীন ভাস্কর্য নিয়ে রহস্যের সমাধান দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মোয়াই নামের এসব বিখ্যাত ভাস্কর্যগুলো আহু নামের স্মৃতিস্তম্ভের ওপর স্থাপিত। কেন এই দ্বীপগুলোতে নির্দিষ্ট স্থানে ভাস্কর্যগুলো স্থাপন করা হয়েছিল তা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে ভাবনার শেষ নেই।

বিশেষজ্ঞদের একটি দল স্থানিক মডেলিং কৌশল ব্যবহার করে ইস্টার আইল্যান্ড বা রাপা নুইয়ে থাকা প্রাকৃতিক সম্পদ ও ভাস্কর্যের স্তম্ভ বা আহুর মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণে কাজ করে। তারা লক্ষ্য করেন, দ্বীপে সীমাবদ্ধ সতেজ পানির উৎসের কাছেই নির্মিত হয়েছিল আহু।

স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের বিংহামটন ইউনিভার্সিটির নৃবিজ্ঞানী কার্ল লিপো বলেন, ‘রাপা নুই বা ইস্টার ‌আইল্যান্ড নিয়ে যেসব বিজ্ঞানী কাজ করেছেন তাঁরা সেখানে পানি সরবরাহ বা পানির অভাবের বিষয়টি প্রায়শই উল্লেখ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘যখন আমরা হাইড্রোলজি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে শুরু করি, আমরা লক্ষ্য করলাম যে মিষ্টি পানির উৎস এবং ভাস্কর্যের অবস্থানের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ভাটার সময় উপকূলের দিকে কীভাবে জলের ধারা আসে- সে বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না।

তিনি বলেন, ‘যেসব স্থানে আহু বা মোয়াই রয়েছে সেসব স্থান ছাড়া অন্য কোথাও মিষ্টি পানি দেখা যায়নি। এটি কীভাবে এমন সামঞ্জস্যপূর্ণ হলো তা এখনো এক বিস্ময়।’

ইস্টার আইল্যান্ডের উপকূলে ভাস্কর্যগুলোর স্থানের মূল কারণ হিসেবে গবেষকরা ইতিমধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানি স্রাব চিহ্নিত করেছেন। কীভাবে নির্দিষ্ট এলাকায় মিষ্টি পানির প্রাপ্যতার সঙ্গে ভাস্কর্য নির্মাণের পদ্ধতি সম্পৃ্ক্ত তা নিয়ে গবেষণার সাম্প্রতিক পর্যায়ে পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা।

প্রায় ৯০০টি ভাস্কর্য বা মোয়াই রয়েছে ইস্টার আইল্যান্ড জুড়ে।

ইউনিভার্সিটি অব আরিজোনার গবেষক টেরি হান্ট বলেন, ‘স্মৃতিস্তম্ভ এবং ভাস্কর্যগুলোর সঙ্গে প্রতিদিন মিষ্টি পানি পাওয়ার সম্পর্কের বিষয়টি সেখানে অধিবাসীদের কাছে জটিল বিষয়। স্মৃতিস্তম্ভ এবং ভাস্কর্যগুলোতে দৈবশক্তি বিদ্যমান বলে পূর্বপুরুষদের যে বিশ্বাস ছিল তা বংশপরম্পরায় এখনো দ্বীপবাসীর ভেতর প্রতিফলিত। পানি ছাড়াও খাবার, পরিবার, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক- এসব কিছুই দ্বীপটির বাসিন্দাদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করেছে।

হান্ট আরো উল্লেখ করেন, দ্বীপটির বাসিন্দাদের মধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক সম্পর্কই ব্যাখ্যা করতে পারে সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও কীভাবে এখানকার মানুষ শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে বেঁচে আছে।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন