২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

উজিরপুরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নৌকার প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:০২ অপরাহ্ণ, ০৭ ডিসেম্বর ২০২০

জহির খান, উজিরপুর:: বরিশালের উজিরপুর পৌরসভায় দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠেয় আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৯ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৪ জনসহ মোট ৩৬ প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। ইতোমধ্যে এসব প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে এবং আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এদিকে অতিআসন্ন এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনিত মেয়র প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীদের গণসংযোগ আর কর্মী-সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বসতবাড়িতেও এখন আলোচনার বিষয় শুধু নির্বাচন।

প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা। পৌরসভার এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে যে ৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তারা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত সদ্য বিদায়ী মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারী, বিএনপির মো. শহিদুল ইসলাম খান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. কাজী শহিদুল ইসলাম। এদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিদায়ী মেয়র গিয়াস উদ্দিন বেপারীর পক্ষে তার কর্মী-সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রচার-প্রচারণায় মুখোর গোটা পৌর নগরী। তাছাড়া পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠার পরে গতবারের অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে বিজয় লাভ করে গিয়াস উদ্দিন বেপারী প্রথম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি অবহেলিত উজিরপুর পৌরসভায় একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ করে নগরবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। প্রথম পৌর অভিভাবক হিসেবে নাগরিক সুবিধার জন্যও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বেপারীর ভূমিকা অকল্পনীয়। তিনি নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য পৌর এলাকার সবগুলো মাটির রাস্তাকে পর্যায়ক্রমে পাঁকা ও ইট বিছানো রাস্তায় রূপান্তরিত করেছেন। একই সাথে রাঁতের আধাঁরে নগরবাসির চলাচলে সুবিধা ও চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা এড়াতে ছোট-বড় সকল রাস্তায় ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করে পুরো পৌর এলাকাকে করেছেন আলোকিত। শুধু রাস্তা নয়, নগরীর ৯টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে উজিরপুর পৌরসভাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এনেছেন। তাছাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বর, পৌর এলাকার চারদিকের সীমানা স্তম্ভসহ কয়েকটি যাত্রীছাউনি নির্মাণ এবং সমাজসেবার মাধ্যমে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার ব্যবস্থা চালু করেন বিদায়ী মেয়র গিয়াস উদ্দিন।

এছাড়াও মুজিব আদর্শের দীপ্ত এই সৈনিক সরকারের উন্নয়নের জাদুকাঠির ছোঁয়ায় অবহেলিত পৌরসভাকে অনেকটা আধুনিকে রূপান্তর করে এবং তিনি কঠোর অবস্থানে থেকে নগরীকে অনেকাংশে মাদকমুক্ত করেছেন। সবমিলিয়ে নাগরিক সুবিধায় বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ এবং অতুলনীয় সমাজসেবায় পৌরবাসীর কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বেপারী। তিনি জানিয়েছেন, এবার মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৌরসভার সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে মাদকমুক্ত আধুনিক পৌরসভা গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। অপরদিকে উন্নয়নের চমকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য নগরবাসীর জনপ্রিয়তায় অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম খান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. কাজী শহিদুল ইসলাম। উভয়েই সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন।

তবে এই দুই মেয়র প্রার্থী ইভিএম ভোটিং পদ্ধতির ত্রুটি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেও প্রত্যেক ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন। পিছিয়ে নেই সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারাও একইভাবে নিজেদের পরিচিতির জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন। রিটার্নিং ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম জানিয়েছেন, নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপির এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনিত প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৯ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ, ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ৬.২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে উজিরপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভায় ৯২৫ নতুন ভোটারসহ মোট ভোটার সংখ্যা ১২০৫৪ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৬০৭৩ জন এবং নারী ভোটার ৫৯৮১ জন।’

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন