২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

উজিরপুরে পদবঞ্চিতদের হাতে লাঞ্ছিত পদধারী যুবদল নেতারা

Zahir Khan

প্রকাশিত: ০৭:১১ অপরাহ্ণ, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

উজিরপুরে পদবঞ্চিতদের হাতে লাঞ্ছিত পদধারী যুবদল নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের হাতে উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারী পদবঞ্চিতদের ধাওয়া খেয়ে পদধারী যুবদল নেতারা একপর্যায়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। গতকাল শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ইচলাদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন টোলপ্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে ইচলাদী টোলপ্লাজা সংলগ্ন এলাকায় উপজেলা যুবদলের সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটি এবং কমিটি বিরোধী দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সদস্য সচিব পনির খান পদবঞ্চিতদের মারধরের শিকার হয়ে নিজেকে বাঁচাতে ঘটনাস্থল সংলগ্ন জেলা ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্টে আশ্রয় নেন। এরমধ্যে ট্রাফিক পুলিশ ও উজিরপুর থানা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব ঘোষিত দোয়া মিলাদ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে উপজেলা যুবদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির আহব্বায়ক আ.ফ.ম সামসুদ্দোহা আজাদ ও সদস্য সচিব পনির খানসহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন যুবদল নেতা শুক্রবার বিকেলে ইচলাদী টোলপ্লাজায় অবস্থান নেয়। পৌর নগরীস্থ বিএনপির স্থায়ী কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে পদবঞ্চিত উপজেলা যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম, তাওহীদ বিন আলী লাবিত, লিমন খান, আরাফিন, পৌর যুবদল নেতা কামরুজ্জামান মিঠু, সোহেল সিকদার, কবির হোসেন, রতন শিউরি ও খোকনসহ কমপক্ষে ৪০ জনের একটি দল মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে টোলপ্লাজায় অবস্থান নেন। এ সময় তারা পদধারী যুবদল নেতাদের বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকতে নিষেধ করেন। তখন উস্কানিমূলক কথা বলায় দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আ.ফ.ম সামসুদ্দোহা আজাদ, সদস্য সচিব পনির খান, যুগ্ন আহবায়ক মাসুম, সোহেল দেওয়ান এবং যুবদল নেতা পরশ খানসহ কমপক্ষে ১০ জনকে লাঞ্ছিত করেন। তবে লাঞ্চিতর ঘটনা অস্বীকার করে উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক আ.ফ.ম সামসুদ্দোহা আজাদ বলেন, ওখানে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। এটা আমাদের নিজেদের মধ্যকার ভুল বোঝাবুঝি। সদস্য সচিব পনির খানের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভি করেননি।

সূত্রে আরও জানা গেছে, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটি এবং কমিটি বিরোধী দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় উপজেলা বিএনপির স্থায়ী কার্যালয়ে শুক্রবার বিকেলে পাল্টাপাল্টি দোয়া মাহফিল কর্মসূচি দিয়েছিলেন। একই স্থানে ও সময়ে একই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং বিশৃঙ্খলা এড়াতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের কর্মসূচি পালন করতে নিষেধ করে থানা পুলিশ। এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি যুবদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় শুক্রবার দুপুরে উপজেলা বিএনপির স্থায়ী কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এর পরেরদিন বৃহস্পতিবার একই স্থানে ও সময়ে দোয়া মাহফিলের আলাদা কর্মসূচির করার ঘোষণা দেন সদ্য গঠিত উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ও জেলা যুবদলের (দক্ষিণ) যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম সামসুদ্দোহা আজাদ।

এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোমিন উদ্দিন জানান, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি উজিরপুর উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কমিটিতে দলের জন্য কাজ করা ত্যাগী নেতাকর্মীদের রাখা হয়নি। বরং ত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিতদের বাদ দিয়ে বিতর্কিতদের সংযুক্ত করে উপজেলা যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরই যুবদলের পদবঞ্চিত পক্ষে ক্ষোভ দানা বাঁধে। এমনকি ত্যাগী ও যোগ্যদের বাদ দিয়ে যুবদলের ওই আহব্বায়ক কমিটি গঠন করায় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেছিলেন।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন