২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

এটি সড়ক না যেন মৃত্যুকূপ?

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:০৬ অপরাহ্ণ, ২০ আগস্ট ২০১৭

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ভোলা সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মহাসড়কের প্রায় যানবাহন চলাচল অনুপোযী হয়ে পড়েছে। সড়কটির অধিকাংশ স্থান মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ রুটে এখন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল যানবাহন শ্রমিক ও স্থানীয়রা।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার সাথে বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার একমাত্র সহজ যোগাযোগ মাধ্যম এ রাস্তা। অথচ ভোলা অংশের সড়কের গুপ্তমুন্সি এলাকা থেকে ইলিশা ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বড় বড় গর্ত হয়ে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রতিদিনই চার-পাঁচটিটি মালবাহী ছোট-বড় ট্রাক আটকে গিয়ে রাস্তাটি বন্দ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ রুটে চলচলকারী শত শত ট্রাক ও লরি শ্রমিকদের। তবে অতিরিক্ত মাল বোঝাই করার কারণে এ সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এক সময় ফেরির জন্য যানবাহনের অপেক্ষা করতে হলেও এখন দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে এ তিন কিলোমিটার রাস্তা পার হতে। তবে সড়ক ও জনপদের লোকজন বড় বড় গর্তে ইট ও বালু ফেললেও তা কোনো কাজে আসছে না। ট্রাক শ্রমিকদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি সংস্কার না করায় এখন ব্যবহারের অনুযোগী হয়ে পড়েছে।

ইলিশার গুপ্তমুন্সি এলাকা থেকে জংশন বাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থানে চার-পাঁচটি ট্রাক আটকে রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। দুই পাশে আরও শতাধিক ট্রাক যাওয়ার অপেক্ষা করছে। কিন্তু কখন যেতে পারবে তা বলতে পারছে না কেউ। এরই মধ্যে আরেকটি ট্রাকের স্কেল ভেঙে পেছনের একটি চাকা ছুটে যায়। এতে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। চালকরা বলছেন এ ট্রাক সরাতে ২/১ দিন লাগতে পারে।

খুলনা থেকে আসা চট্টগ্রামগামী ট্রাকের ড্রাইভার এনায়েত হোসেন জানান, দূর পাল্লার সড়কগুলোর মধ্যে ভোলা-চট্টগ্রাম রুটের ভোলা অংশের এ রাস্তাটির মতো খারাপ রাস্তা বাংলাদেশের কোথাও নেই। দ্রুত সময়ে যাওয়ার জন্য আমরা এই রুটটি ব্যবহার করি। কিন্তু এখন যে অবস্থা ৩ থেকে ৪ দিনের আগে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।

ঢাকা থেকে মুদি মাল নিয়ে আসা ট্রাক ড্রাইভার নুরে আলম নসু জানান, রাস্তাটি খারাপ থাকার কারণে ড্রাইভারদের অনেক দুঃখ দুর্দশা পোহাতে হচ্ছে। একবার গাড়ি আটকিয়ে গেলে চার-পাঁচ দিনেরও বেশি সময় রাস্তায় থাকতে হয়।

ট্রাক শ্রমিক ইউছুফসহ অনেকেই জানান, ‘রাস্তার যে অবস্থা হয়েছে এতে চলাচলের অনুপযোগী। যদি রাস্তা সংস্কার করতে না পারে তাহলে রাস্তাটি বন্ধ রাখুক। শুধু শুধু আমাদেরকে কষ্ট দেয়ার কী দরকার?’

গুপ্তমুন্সি এলাকার নুরে আলমসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ তিন মাস ধরে ভোলার এ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি মেরামত না করায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি দিয়ে দৈনিক দূরপাল্লার সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করে। প্রতিদিনই চার-পাঁচটি ট্রাক-পিকাপ রাস্তার মধ্যে আটকে থাকে।

এতে করে যাবাহন চলাচলে যেমন বিঘ্ন ঘটে, তেমনি মানুষ চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করা না হলে কিছু দিনের মধ্যে এটি দিয়ে মানুষও হাঁটতে পারবে না।

এ বিষয়ে ভোলার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, শুধু ভোলাতে না, বাংলাদেশের অনেক জেলাতে রাস্তা খারাপ রয়েছে। এটা হচ্ছে একদিকে বর্ষা অন্যদিকে ট্রাকগুলো অতিরিক্ত মাল বোঝাই করার কারণে রাস্তাগুলো আরও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তবে ভাঙা অংশগুলো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষমৌসুম শেষ হলে পরানগঞ্জ থেকে ইলিশারহাট পর্যন্ত রাস্তাটির ১৪ কেটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন