১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

এ কি বললেন গৌরনদী ওসি সরোয়ার!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৩৬ অপরাহ্ণ, ০২ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২১৷ (২) নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য৷’ ৭ (১) নম্বর অনুচ্ছেদের বলা হয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’। এই দুই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী স্পষ্ট যে, সরকারি সকল চাকরিজীবী জনগণের সেবক এবং তারা সকল সময়ে জনগণের সেবা করবেন। সেখানে একজন ওসি ‍যিনি আইনের রক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন তিনি বললেন তিনি কারও চাকর নন!

এ ঘটনা ঘটেছে গৌরনদী মডেল থানায়। এ সময় তিনি ক্রোধে আক্রান্ত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন সম্মানিত নাগরিককে আটকে রাখেন সাড়ে ১১ ঘন্টা। এ ঘটনার শিকার বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এ্যাড. রবীন্দ্রনাথ ঘোষসহ তার অপর ২ সহযোগী।

বুধবার বেলা ১১টা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত দীর্ঘ ১১ঘন্টা বরিশালের গৌরনদী মডেল থানায় আটক ছিলেন বাংলাদেশ মাইনরটি ওয়াচের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এ্যাড. রবীন্দ্রনাথ ঘোষসহ তার অপর ২ সহযোগী। অবশেষে রাত সাড়ে দশটায় তারা মুক্তি পান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায়।

মাইনরটি ওয়াচের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, ‘গৌরনদী এলাকার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের মাইনরিটি পরিবারের স্কুল ছাত্র সৌরভ মন্ডল (১০) হত্যাকাণ্ড ও সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি মন্দির ভাঙ্গার ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে বুধবার বেলা ১১ টার দিকে আমি গৌরনদী থানায় যাই। এ সময় আমার সঙ্গে ছিলেন সংগঠনের অপর ২ সদস্য দিলীপ কুমার রায় ও রসরাজ চৌধুরী। আমরা ওসিকে আসার আগেই মোবাইল করে আসি। গৌরনদীতে মাইনরিটি সম্প্রদায়ের মন্দির ভাঙ্গা সহ নানাবিধ সমস্যার কথা ওসি সাহেবকে জিজ্ঞাশা করতেই তিনি ক্ষিপ্ত হন।’

অ্যাডভোকেট রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আরও বলেন, ‘ এ সময় ওসি বলেন, আমি কারো চাকর নই। এই বলে আমাদের ৩ জনের মোবাইল ও ক্যামেরা কেড়ে নেন।’

তিনি আরো জানান, ‘ওসির নির্দেশে এসআই সোহাগ আমাদের ধাক্কাতে ধাক্কাতে ওসির রুম থেকে বের করে তদন্ত ওসির রুমে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘক্ষণ আমাদের আটক রাখা হয়। পরবর্তীতে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রব হাওলাদার, বরিশাল জেলা পুলিশের অপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ রাকিব হোসেন ও চাঁদশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কান্ত দের মধ্যস্থতায় আমাদের রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়।’

এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ গোলাম সরোয়ারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তারা আমার রুমে প্রবেশ করে প্রথমে একজন মানবাধিকারের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেন। অন্য ২জন একই সংগঠনের সদস্য বলে পরিচয় দেন। এক সময় তারা আমার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ সময় যাচাই করে প্রমাণ পাওয়া যায় তারা মিথ্যা পরিচয় দিয়েছেন। এ জন্য তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে নিজেদের ভুল স্বীকার করলে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন