২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

করোনার ধাক্কায় কাতারফেরত স্বপনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৫১ অপরাহ্ণ, ০৭ নভেম্বর ২০২০

রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া: রঙিন স্বপ্ন নিয়ে জীবনকে বদলে ফেলতে চাকরি নামের সোনার হরিণের খোঁজে ১৯ মাস পূর্বে সুদূর কাতার গিয়েছিলেন বরিশালের বানারীপাড়ার পশ্চিম সলিয়াবাকপুর গ্রামের স্বপন। সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে ভালোই কাটছিল তার। স্বপনের কাতার যেতে হওয়া ঋণ একটু একটু করে পরিশোধের পাশাপাশি স্ত্রী, ১০ বছর বয়সী জুঁই ও তিন বছরের মেয়ে জামিলাকে নিয়ে সংসার ভালোই চলছিল। দু’মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে তাদের আলোকিত জীবন গড়ে তোলার পাশাপাশি সংসারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য আনার স্বপ্ন নিয়ে কাতারে রাত-দিন কাজ করে অর্জিত অর্থ দেশে পাঠাতেন তিনি। কিন্তু স্বপনের স্বপ্ন হারিয়ে হঠাৎ অমানিশার ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। আর সেই অন্ধকার নামিয়ে দেয় কভিড-১৯। বরিশালটাইমস।

করোনার কারণে কাতারে ৫ মাস বেকার হোমকোয়ারেন্টাইন জীবন কাটিয়ে চার মাস পূর্বে তাকে খালি হাতে দেশে ফিরে আসতে হয়। দেশে এসে কর্মহীন থেকে সংসারে নিত্য অভাব ও বিদেশে যেতে হওয়া ঋণ পরিশোধের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। শেষে বানারীপাড়া পৌর শহরের বন্দর বাজারের ফেরিঘাট সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর তীরে শহর রক্ষা বাঁধের আদলে নির্মিত নতুন ছোট্ট একটি ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে চা-বিস্কুট-সিঙ্গারার দোকান দেন তিনি।

এ দোকানে সারা দিনে তার আয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। তার এ সামান্য আয় দিয়ে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। কিভাবে দু’মেয়ের লেখাপড়ার খরচ, ৪ জনের সংসারের ভরণপোষণ ও ঋণ পরিশোধ করবেন এ দুঃশ্চিন্তায় তিনি কাতর।

এ ছাড়া নদীর তীরে রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা দোকানটিও পৌর কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে। প্রাণঘাতি করোনা স্বপনের সব স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছে। বিদেশের সুখের জীবনে অমানিশার ঘোর অন্ধকার নামিয়ে আজ ফুটপাতের অনিশ্চিত জীবনের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

এ বিষয়ে স্বপন বরিশালটাইমসকে বলেন, করোনা আমাকে পথে বসিয়েছে। বড় আশা নিয়ে আমি কাতার গিয়েছিলাম। ফিরে আসলাম খালি হাতে। এখন যে ভালো কোনো ব্যবসা করব সেই উপায়ও নেই আমার কাছে। কিছু অর্থ পেলে ভালো কোনো ব্যবসার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

8 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন