১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম

কলাপাড়ায় স্বামী ও সন্তানের পিতৃপরিচয় দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সুমী

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪:০২ অপরাহ্ণ, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

কলাপাড়ায় স্বামী ও সন্তানের পিতৃপরিচয় দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সুমী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: স্বামীর অধিকার ও সন্তানের পিতৃপরিচয় আদায়ে ছেলে ও বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন অসহায় সুমী আক্তার। জনপ্রতিনিধি থেকে এলাকাবাসী সবাই জানেন সুমী ও বশির হাওলাদারের দাম্পত্য জীবনের কথা। কিন্তু আইনি জটিলতা ও বশিরের আর্থিক দম্ভে সবাই অসহায়।

কেউ দাঁড়াচ্ছে না সুমীর পাশে। যদিও এ নিয়ে একাধিক সালিশ হয়েছে। কিন্তু বশির এ নারীকে মেনে না নেওয়ায় এখনো স্বামীর বাড়ি যেতে পারেননি তিনি। তার সন্তান বাবা বলে ডাকতে পারেনি বশিরকে। তাই প্রশাসন ও মানবাধিকার পরিষদের কাছে আইনি সহায়তা চাইছেন সুমী। দাবি করছেন স্ত্রীর অধিকার।

জানা যায়, কলাপাড়ার খেপুপাড়া সিনিয়র মাদ্রাসায় সুমী যখন ফাজিলের (ডিগ্রি) ছাত্রী, তখন টিয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুড়তলী গ্রামের তৎকালীন ইউপি সদস্য বশির উদ্দিন হাওলাদারের সঙ্গে পরিচয় হয়। তখন বশির তার প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রাখে। এ ঘরে তার দুটি সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে সুমীকে বিয়ে করেন এবং পৌর শহরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন।

পরে সুমী বিয়ের বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে প্রথমে মেনে না নিলেও পরে তার পরিবার বিয়েটি মেনে নেয়। এর পর বশির প্রায়ই কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নে তার শ্বশুরের বাড়িতে বেড়াতে যেত।

২০১৬ সালে সুমী যখন সাত মাসের অন্তঃসত্তা তখন প্রথম স্ত্রীর খবর প্রকাশ পান। এর পর থেকে বসির উদ্দিন সটকে পড়েন। তিনি তাকে স্ত্রী হিসেবে মানতে অস্বীকার করেন। কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে সুমী আক্তার পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মলনে তিনি তার জীবনের এ দুঃখের ঘটনা জানান।

সুমী বলেন, গত ছয় বছর ধরে ঘুমাতে পারছেন সন্তানের কী হবে এ চিন্তায়। তার লিভার ও কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না তার বাবা স্বাধীনকে মেনে না নেওয়ায়। এখন মানুষ তার দিকে আঙুল তুলছে। পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। এখন মৃত্যু ছাড়া তিনি উপায় দেখছেন না।

সুমী আক্তার বর্তমানে নিজেকে অসহায় দাবি করে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান। ছয় বছরের পুত্রসন্তান স্বাধীনসহ নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনের সহায়তা চেয়েছেন।

সুমী ও বশিরের বিয়ের বিষয়টি জানতেন টিয়াখালী ইউনিয়নের তৎকালীন ইউপি সদস্য মো. আল আমিন। তিনি জানান, তাদের বিয়ের বিষয়টি নিয়ে পরিষদে একাধিক সালিশ বসেছিল। সব প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বশির বিয়ে ও সন্তানকে মানতে অস্বীকার করে।

আর বশিরের ভাতিজা জাবের সিকদার জানান, তার চাচিকে নিয়ে বসির যখন কলাপাড়া পৌর শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন, তখন অনেক দিন তিনি বাজার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। কিন্তু বশির এখন কেন বিয়ে ও সন্তান মেনে নিচ্ছে না তা বুঝতে পারছি না। এ বিষয়ে বশির হাওলাদার বিয়ে ও সন্তানের কথা অস্বীকার করে বলেন, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। তাই এ বিষয়ে তিনি কথা বলতে চান না।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন